মিজানুর রহমান, হরিপুর প্রতিনিধি: গৃহকর্মীকে জোর পূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফেরদৈাস খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ধর্ষক হলো ঢাকা জেলার কাফরুল থানার ইব্রাহীমপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলী খানের ছেলে এবং হরিপুর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার। ধর্ষিতার বাড়ি হরিপুর উপজেলার খোলড়া গ্রামে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, হরিপুর উপজেলার টেকনিক্যাল মোড়ে মিরা নামে এক জনের বাসা ভাড়া নিয়ে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফেরদৈাস খান বসবাস করতেন। তার রান্নার ও ঘর পরিস্কার কাজের জন্য মামলার বাদী (ধর্ষিতা) কে কাজের বুয়া হিসেবে রাখেন। ফেরদৈাস খান প্রায় কাজের বুয়াকে বিভিন্ন ভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসতো। সে এসব বিষয় এড়িয়ে চলতো। ঘটনার দিন গত ১০ এপ্রিল বুধবার আনুমানিক সকাল ৭ টার দিকে গৃহকর্মী রান্না বান্না করে খাবার টেবিলে সাজাইয়া রাখিলে ফেরদৈাস খানসহ তার সহযোগি জনৈক এক ব্যক্তি খাবারের টেবিলে আসে। এসময় অজ্ঞাত কারণে তার সহযোগী রুম থেকে বের হয়ে গেলে ফেরদৈাস খান ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে গৃহকর্মীকে ঝাপটে ধরে। এসময় গৃহকর্মী চিৎকার দিলে ফেরদৈাস খান তার মুখে কাপড় ঢুকাই দিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করতে থাকে এবং ফেরদৈাস খানের সহযোগি দরজার বাইরে পাহারা দিতে থাকে। এক পর্যায় গৃহকর্মী জোরে আত্মচিৎকার দিলে তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ধর্ষক ফেরদৈাস খান দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ফেরদৈাস খান বিষয়টি নিয়ে আপোষ মিমাংশা করার আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপন করেন। অবশেষে ধর্ষিতা গত ১৩ এপ্রিল হরিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৭ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল) মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত বাদীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে বাদীর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশ মতে গত ৫মে হরিপুর থানা কর্তৃপক্ষ বাদীর অভিযোগটি ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধনী) ০৩/এর ৯(১)/৩০ ধারা মোতাবেক মামলা রুজু করেন।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য হরিপুর উপজেলার উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফেরদৈাস খানের এই ০১৭৩৭০৩১৬৯০ নাম্বারে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার মোস্তাফিজার রহমান জানান, উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ফেরদৌস খান হরিপুরে ডিপুটেশনে ছিল তার কর্মস্থল দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে, তবে উদ্ধর্তন কতৃপক্ষ মৌখিকভাবে জানিয়েছেন তাকে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। মামলার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার জানামতে তার বাসায় কোন গৃহকর্মী ছিল না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরিপুর থানার (ওসি) তদন্ত আমিরুল ইসলাম জানান মামলাটি স্পর্শকাতর, অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।