বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: চিকিৎসাসেবা শেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে উদ্ধারকৃত বিলুপ্তপ্রায় একটি মদনটাক পাখিটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল।
শুক্রবার সকাল ১১টায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বন বিভাগের কর্মকতাদের নিকট উদ্ধারকৃত পাখিটি হস্তান্তর করা হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের লাইভস্টক প্রোভাইডার মোঃ মনতাজুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের প্রসাদ পাড়া গ্রামের চৌরাস্তা সংলগ্ন এলাকায় বাঁশবাগানে একটি বড় পাখি এসে পড়ে। পাখিটি খুব দুর্বল হওয়ার কারণে উড়াতে পারছে না এবং এলাকার লোকজন ধরার জন্য চেষ্টা করছে এমন সংবাদের ভিত্তিত্বে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে পাখিটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রানিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। পরে পাখিটিকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে শুক্রবার সকালে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বীরগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিরঞ্জন রায় জানান, উদ্ধাকৃত এই পাখিটির নাম মদন টাক। এই সাধারণত বাংলাদেশে বিলুপ্তর পথে। দেশে আনাচে-কানাচে কিছু পাখি দেখা গেলেও কিন্তু বড় বড় গাছ না থাকায় এবং মানুষের অস্বাভাবিক আচরণে তারা খাদ্য অহরণ ও বসবাসের স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণে খাদ্যের খোঁজে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলে। খাদ্যের খোজে ছুটতে ছুটতে এ সময় দুর্বল লোকালয়ে এসে পড়ে। এ সময় দুষ্ট প্রকৃতির মানুষ তাদের আহত করে। ঠিক এমনি সংবাদে উপজেলা প্রানিসম্পদ দপ্তর পাখিটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। শুক্রবার সকাল ১১টায় আমাদের নিকট আনুষ্ঠানিক ভাবে পাখিটি হস্তান্তরের পর দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল-আল-মামুন মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা পাখিটি রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিরাপদ হেফাজনে রাখার উদ্যোগ গ্রহন করেছি।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ শামিমা বেগম জানান, আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করার পর পাখিটি এখন অনেক সুস্থ্য। তবে এখনও কিছুটা দুর্বল থাকলেও অব্যাহত চিকিৎসা সেবায় দ্রæত সুস্থ্য হয়ে উঠবে। পাখিটির ওজন বর্তমানে ২কেজি ৮শতগ্রাম বলে তিনি জানান।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওসমান গনি জানান, লোকালয়ে পাখিটির অবস্থানের সংবাদ পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। উদ্ধারের পর আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছি। পাখিটির দ্রুত সুস্থ্য হয়ে যেন আবার প্রকৃতিতে ফিরে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা পত্র, ঔষধ এবং খাদ্য তালিকাসহ আনুষ্ঠানিক ভাবে বন বিভাগ কর্মকর্তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। প্রতিটি বন্যপ্রাণী আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমরা আশা করবো লোকালয়ে আসা বন্যপ্রাণীদের ক্ষতি সাধন না করে তাদের উদ্ধারে দেশের প্রতিটি মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন।
পাখি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওসমান গনি, উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ শামিমা বেগম, বীরগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিরঞ্জন রায়, সামাজক বন বিভাগের মালী মোঃ আব্দুর রহমান এবং স্থানীয় গণ্যমাধ্যমকর্মীবৃন্দ।


















