Sunday , 25 February 2024 | [bangla_date]

অভাবে পড়ালেখা থেমে গেলেও থামেনি স্বপ্ন \ বিমান তৈরি করে উড্ডয়ন আলমগীরের

খানসামা প্রতিনিধি\ অভাবের সংসারের কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন পুরন না হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের আলমগীর লক্ষ্যপুরনে থেমে যায়নি। অনলাইন ও ইউটিউব থেকে ধারণা নিয়ে প্রায় ৩-৪ বছর ধরে বিভিন্ন মডেলের বিমান তৈরী করে উড্ডয়নের চেষ্টা করেছে। অবশেষে সফল ২০২৪ সালে সফল হলেন যুবক আলমগীর।
বিমান তৈরী করে উড্ডয়ন করার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের ভান্ডারদাহ গ্রামের নুরল মেম্বার পাড়ার ২৩বছর বয়সী যুবক আলমগীর ইসলাম।তাঁর তৈরী এই বিমানটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে প্রায় আধাঘন্টা উড়তে পারে। যুবকের এই উদ্ভাবন দেখতে এখন প্রতিদিন ভিড় করেন আশপাশের গ্রামের অনেক মানুষ।
শনিবার ওই এলাকায় দেখা যায়,স্থানীয় খেলার মাঠে ছোট বিমান উড্ডয়ন করছেন আলমগীর। এসব উৎসুক জনতা ও স্থানীয়দের উপচে পড়া ভিড়।
স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কিন্তু অভাবের সংসারে ২০১৯সালে উচ্চ মাধ্যমিকেই থেমে যায় ভান্ডারদাহ গ্রামের আব্দুল মজিদ ও জাহানারা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে আলমগীর। বাড়ির কাজের পাশের পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক স্যালোমেশিন দিয়ে পানি দেওয়া ও বিভিন্ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত এ যুবক আলমগীর। তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট সে। প্রাইমারী স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য তৈরীর কাজে সময় ও অর্থ ব্যয় করেছেন।
প্রায় ৩-৪ বছর ধরে সাথে বিভিন্ন মডেলের বিমান তৈরী করে উড্ডয়নের চেষ্টার পর সফল হয়েছে ২০২৪ সালে। এর পূর্বে অনেক বিমান তৈরী করেছে ভেঙেছে আবার নতুন করে তৈরী করেছে। বিমানটি গত ডিসেম্বর থেকে চূড়ান্তভাবে তৈরী করে ফেব্রæয়ারী মাসের শুরুতে শেষ হয়। এরপরে বাড়ির পাশে খেলার মাঠে পরীক্ষামূলকভাবে বিমানটি উড্ডয়ন করলে এলাকা জুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়।
প্রায় ১২ হাজার টাকা দিয়ে তৈরী এই ছোট বিমানের মূল বডি ককশিট দিয়ে তৈরি করেছেন আলমগীর। এছাড়া ট্রান্সমিটার, রিসিভার, লিপো ব্যাটারি, শক্তির জন্য ব্রাসলেস মোটর ও ছোট ফ্যান ও চাকা রয়েছে। একটি রিমোট বিমানটি আকাশে উড়িয়ে নিয়ন্ত্রণ হয়।
তাঁর বাবা-মা আব্দুল মজিদ ও জাহানারা বেগম দম্পতি জানায়, ছোটবেলা থেকেই সে বিভিন্ন প্রকার যন্ত্র তৈরীর কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর উপার্জিত অর্থ দিয়ে সে এসব তৈরী করে।সংশ্লিষ্টদের যদি সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে আমার ছেলের স্বপ্ন অনেকটাই পূরণ হবে।
ওই এলাকার সামসুল ইসলাম নামে একজন বলেন, অস্বচ্ছলতার কারণে আলমগীর তাঁর প্রতিভা বিকশিত করতে পারছে না, তাই সবার সুদৃষ্টি প্রয়োজন।
এই বিমান নির্মাতা আলমগীর ইসলাম বলেন, ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল বিমান তৈরীর সেটি আজ পূরণ হয়েছে। তবে আমার একটি ল্যাপটপ ও আর্থিকভাবে সক্ষমতা থাকলে এই ছোট বিমানটি আরো উন্নত করা যেত। সেই সাথে সহায়তা পেলে আমার শৈশবের এই স্বপ্ন পূরণের ধাপ আরো এগিয়ে যেত।
উদ্ভাবনী এই কাজের প্রশংসা করে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ তাজ উদ্দিন বলেন, এমন উদ্ভাবনী কার্যক্রম স্মার্ট বাংলাদেশ বির্মাণের অগ্রযাত্রায় একটা উদাহরণ। এই প্রযুক্তি বিকাশে প্রশাসন তাঁর পাশে থাকবে।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত