Friday , 31 May 2024 | [bangla_date]

দিনাজপুরের বাজারে আসা রসাল লিচুর দাম চড়া

দিনাজপুর শহরের নিউমার্কেটে ১১ দিন আগে থেকে লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সরব লিচুর বাজার। বাজারে উঠেছে মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু। এবার সরবরাহ কম থাকায় লিচুর দাম বেশি। এতে ক্রেতারা অখুশি হলেও কৃষক ও ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক।
স¤প্রতি দিনাজপুর জেলা শহরের নিউমার্কেট ঘুরে দেখা যায়, প্রতি এক হাজার মাদ্রাজি লিচু ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বেদানা লিচু বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকায়।
লিচুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার বাজার শুরু থেকে চড়া। গতবারের চেয়ে জাতভেদে প্রতি হাজার লিচু ৭০০-৮০০ টাকা বেশি দাম রাখতে হচ্ছে। কারণ, জেলার কিছু কিছু জায়গায় লিচুর ফলন একেবারেই কম। তা ছাড়া প্রচÐ তাপপ্রবাহে লিচুর মুকুল ঝরে গেছে। অবশিষ্ট যা আছে, ইতিমধ্যে ফাটতে শুরু করেছে। আর তাই অনেক কৃষক লিচু পেড়ে আগাম বাজারে আনতে শুরু করেছে।
শুক্রবার নিউমার্কেটে ২০০ মাদ্রাজি লিচু ৬০০ টাকায় কিনেছেন আবদুস সাত্তার (৪৭)। তিনি বলেন, ‘দু–একটা খেয়ে দেখলাম। কিছুটা টক। এই লিচু আরও এক সপ্তাহ পরে বাজারে আনলে ঠিকঠাক স্বাদ পাওয়া যেত। কিন্তু ছেলেমেয়েদের আবদার রাখতে কিনতেই হলো।’
লিচু ব্যবসায়ী রুস্তম আলী বলেন, ‘কেবল মৌসুমটা শুরু হয়েছে। দিনাজপুরের লিচু দেশের বিভিন্ন জায়গায় কুরিয়ারে পাঠানো হয়। এখনো সেভাবে বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। যাঁর গাছে ফল আছে, তাঁরা এবার ভালো দাম পাবেন। গতবার তাপপ্রবাহে কৃষক লিচুতে মার খেয়েছেন। তাপমাত্রা এবারও যদি একই রকম থাকে, তাহলে রক্ষা নাই। অনেক ব্যবসায়ীই আছেন, কৃষকের কাছে পাঁচ বছরের জন্য বাগান চুক্তি নিয়েছেন। রৌদ্রে লিচুর ক্ষতি বেশি হলে লোকসানের সীমা থাকবে না।’
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার জেলায় ৫ হাজার ৪৮৯ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৩৮ হেক্টরে বোম্বাই জাতের লিচু, ১ হাজার ৭৮ হেক্টরে মাদ্রাজি, ৭০৭ হেক্টরে চায়না থ্রি, ৩১০ হেক্টরে বেদানা, ১৩২ হেক্টরে চায়না টু এবং ২৪ হেক্টর জমিতে কাঁঠালি জাতের লিচু আবাদ হয়েছে। এবার লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ১১৭ মেট্রিক টন।
গত দুই দিন দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর, মাসিমপুর, আউলিয়াপুর, মহব্বতপুর ও বিরলের মাধববাটি, রবিপুর এলাকায় লিচুবাগান ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার অধিকাংশ মাদ্রাজি ও বেদানাগাছে ফলন কম। কোনো কোনো গাছে একেবারেই ফল নেই। মাঝে দু–একটি গাছে ফল থাকলেও ইতিমধ্যে ঝলসে যেতে শুরু করেছে। কিছু কিছু গাছের ফল ফেটে গিয়ে পড়ে যেতে শুরু করেছে।
মাসিমপুর এলাকার লিচুচাষি আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার বাগানে মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচুর ১০০টি গাছ আছে। নিজের চোখ দিয়েই দেখেন ফলন আছে কি না?’ তিনি বলেন, ‘এবার মুকুল এসেছিল খুব বেশি। কিন্তু রোদে সব পুড়ে গেছে। এখন গাছগুলোতে ৪০ শতাংশ লিচুই পাওয়া যাবে না। তা আকারও ছোট হয়েছে। এবার ৩৮টি গাছে কোনো ফলই ধরেনি।’
আউলিয়াপুর এলাকার চাষি ও ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘রোদে সব শেষ হয়ে গেছে। তবে কয়েক দিন আগে বৃষ্টিটা হওয়ায় বোম্বাই জাতের লিচুর কিছুটা রক্ষা হয়েছে। এই তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে বোম্বাই লিচুও ধরা খাবে। গতবারও তো এই রোদের কারণে লিচুতে লোকসান গুনেছি। ছয় লাখ টাকায় বাগান চুক্তি নিয়েছি। এবার মনে হচ্ছে খরচটাও উঠবে না।’
লিচুর রাজ্য বলে খ্যাতি আছে দিনাজপুরের। চাষের জন্য উপযোগী বেলে-দোআঁশ মাটি হওয়ায় এ অঞ্চলে লিচু চাষে কৃষকের আগ্রহের কমতি নেই। এখানে চাষ হয় মাদ্রাজি, বোম্বাই, বেদানা, চায়না থ্রি, কাঁঠালি জাতের লিচু। জেলার ১৩টি উপজেলায় কমবেশি সব জায়গায় লিচুর চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় সদর উপজেলার মাসিমপুর, মহব্বতপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, মহেশপুর, বটহাট, চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলায়।
বিরলের রবিপুর এলাকার লিচুচাষি মোহাম্মদ শিশির শাহ বলেন, ‘বোম্বাই জাতের ৮০০ গাছের বাগান আমার। এবার টানা এক মাস প্রচÐ তাপপ্রবাহ গেল। বোম্বাই জাতের লিচু সাধারণত দেরিতে হয়। কয়েক দিন আগে বৃষ্টিটা হওয়ায় কিছুটা উপকার হয়েছে। না হলে মাদ্রাজির মতো বোম্বাই লিচুর সমস্যা হতো। গত বছর শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও পশ্চিমা উষ্ণ বাতাসের কারণে অন্তত ৪০ শতাংশ লিচু গাছেই ঝলসে যায়। এবারও যদি তাপমাত্রা বেশি হয়, তাহলে শ্রম দেওয়াটা হবে পÐশ্রম।’
এ বিষয়ে বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলছেন, এবার লিচুতে মুকুল আসা পর্যন্ত অনুক‚ল আবহাওয়া ছিল। কিন্তু পরে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় মাদ্রাজি লিচুর কিছুটা ক্ষতি হলেও অন্যান্য জাতের লিচুর ক্ষেত্রে সে রকম প্রভাব পড়েনি। এবার বোম্বাই ও চায়না থ্রিতে ভালো ফলন হয়েছে। লিচু ফেটে ঝরে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাঁরা নিয়মিত সেচ দেওয়া অব্যাহত রেখেছিলেন, তাঁদের গাছে এই সমস্যা হবে না। গত বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে কিছু গাছের ফসল নষ্ট হয়েছিল। আশা করি, এবার কৃষকেরা সঠিক নিয়মে পানি ও সার ব্যবস্থাপনা করেছেন। আমরাও নিয়মিত মাঠপর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছি।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

বীরগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধ*র্ষণ মামলায় শিক্ষক গ্রে*প্তার

বীরগঞ্জে গরু“র হাট বন্ধে কোরবানির গরু“ নিয়ে চরম বিপাকে খামারিরা

১৫ রমজন উপলক্ষে স্বপ্ন ব্লাড ফাউন্ডেশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ঘোড়াঘাটে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন

পার্বতীপুরে ডিস ব্যাবসার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর পিপুল হত্যাকান্ড সংঘটিত

মাদক নয়, খেলাধূলাকে আপন করতে হবে যুবকদের -গোপাল এমপি

পঞ্চগড়ে আস্থা প্রকল্পের তথ্য বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা

শীঘ্রই দিনাজপুরে ভিসা প্রসেসিং সেন্টার ও বিরল-রাধিকাপুর ইমিগ্রেশন চালু হবে ——- ভারতের সহকারী হাইকমিশনার

আটোয়ারী মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষসহ ৬ শিক্ষকের অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা