বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার শশুরের কবরে খায়রুন আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গৃহবধু পরিবারের দাবি দীর্ঘদিন বাচ্চা না হওয়াকে কেন্দ্র করে তার শশুরবাড়ীর লোকজন হত্যা করেছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৮ টায় উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধু ওই গ্রামে তাজমুল হকের (৩৫) স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের জিয়াখোর গ্রামের সাদেকুল ইসলামের মেয়ে।
নিহত গৃহবধু পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় ৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে খায়রুন আক্তারের বিয়ে হয় তাজমুল হকের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে সন্তান না হওয়াকে কেন্দ্র করে তার ওপর নানা সময় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো। স্বামী তাজমুল হক, শাশুড়ি দরিফন বেগম এবং চাচি শাশুড়ি দুলালি বেগম এ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পরিবারের। তার স্বামী কাজের সুবাদে ৫/৬ দিন পূর্বে কুমিল্লায় গেছে। আমাদের সন্দেহ রাতে এসে আমাদের মেয়ে মেরে আবার লুকিয়ে আছে বা কুমিল্লায় চলে গেছে।
নিহতের মা আলেয়া বেগম ও ভাই আলমগীর বলেন, “আমাদের মেয়েকে প্রায়ই নির্যাতন করা হতো। তাদের মেয়েটা পোষায়নি, তাই পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে। যদি না রাখতে চাইত, ফিরিয়ে দিত এভাবে মরতে হতো না। আমরা বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।”
স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন খায়রুন। সকালে গোয়ালঘরের গরু বের না করায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে বাড়ির পাশেই শ্বশুরের কবরের ওপর হাত বাঁধা অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে শাশুড়ি দরিফন বেগম বলেন, “আমি আর আমার জামাই সকালে মরিচক্ষেতে ছিলাম। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, জানি না। আগে ঝগড়া হতো, তবে গত দুই মাস কোনো ঝগড়া হয়নি।”
চাচা শ্বশুর এ কে এম মানিক বলেন, “রাতে খায়রুন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সকালে ঘরে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি হয়। এক পর্যায়ে ভুট্টাক্ষেতে তার জুতা দেখে সন্দেহ হলে খোঁজ করতে করতে শ্বশুরের কবরের পাশে মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।”
বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, “খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”















