ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি \দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিবেচক সিদ্ধান্তে ফরম পূরণের ফি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষাঙ্গন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণের ফি অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে কলেজ চত্বরে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সমবেত হয়ে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম, সাকিব রহমান, মুরাদ হোসেন, আশারাফি রিম, সজীব আহমেদ অনিক, রাহাত পারভেজ, রায়হান মন্ডল, ইয়াছিন ইসলাম, নুরে জান্নাত, নুসরাত জাহান, ফারহানা আক্তার মিমি, মেহেনাজ আক্তার, রুকাইয়া আক্তার বর্ষা, নাজিম মন্ডল, মনিরুজ্জামান শুভ, মো. আরিফুল, গোলাম মোস্তফা, মৌমিতা রায়, নমিতা শীল, মাগফেরাতুজ জান্নাত মিম প্রমুখ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হঠাৎ ফি বৃদ্ধি সাধারণ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য শিক্ষাকে বিলাসে পরিণত করছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অযৌক্তিক কর্মকাÐ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে।”
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি ফরম পূরণের ফি অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা সাধারণ ও মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বহন করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার, অতিরিক্ত ফি ধার্য করণ শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার পরিবেশ বিপন্ন করে। অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষেই অতিরিক্ত এই ফি পরিশোধপূর্বক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করা অসম্ভব। ফলে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অন্যায্যভাবে আরোপিত এই অতিরিক্ত ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
তারা আরও বলেন, পূর্ণপত্রে ২৫০ টাকার জায়গায় ৩৫০ টাকা, অর্ধপত্রে ২০০ টাকার জায়গায় ২৫০ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষায় ২৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৫০ টাকা, ইনকোর্স ফি ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা, কেন্দ্র ফি তত্ত¡ীয়তে ৪৫০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা, ব্যবহারিক কেন্দ্রে ১৫০ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকা এবং বিশেষ অন্তর্ভুক্তিতে ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মোট ফি ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার এবং সি প্রমোটেড শিক্ষার্থীদের ফি ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
“শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তা ব্যবসার পণ্যে রূপান্তর করছে। অন্যায় ভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাঁধে বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে । আমরা এর তিব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তারা ঘোষণা দেন, “অযৌক্তিক ফি প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে এবং প্রয়োজনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অচল করে দেওয়া হবে।” মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।