হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\ সরকার আসে, সরকার যায়; কিন্তু ৫০ বছরেও একটি সেতু জোটেনি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের দেউলী ঘাট এলাকার মানুষের কপালে। স্থানীয়রা নিজেদের অর্থে কাঠ দিয়ে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করেছেন। সেই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে আশপাশের ৭ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। দ্রæত সেতু নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের দেউলী ঘাট নদীর ওপর বাঁশ-কাঠের ভাঙাচোরা সাঁকো। বর্ষা এলেই সিমেন্টের খুঁটির ওপর সেই সাঁকো পেরিয়ে জীবন বাজি রেখে চলাচল করতে হয়। এই পথ দিয়ে খাইরুল, ঋষিঘাট, চাঁদপাড়া, ভর্নাপাড়া, সাতপাড়া, মগলেশপুর, নলডাঙ্গা, গিলাবাড়ি ও আঙ্গারীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। প্রায় ৫০ বছর ধরে একটি স্থায়ী সেতুর জন্য আকুল প্রার্থনা করছেন ৯ গ্রামের বাসিন্দারা। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সংযোগপথ অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেউলী ঘাট কৃষিনির্ভর একটি জনবহুল এলাকা এবং উপজেলা সদর ওসমানপুরের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগপথ। বর্ষাকালে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ার জন্য প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়, এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হয়। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও থেকে যায়।
তাদের অভিযোগ, বর্ষায় শিশু, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও রোগীদের যাতায়াত চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়। নৌকা কিংবা ভাঙা বাঁশ-কাঠের সাঁকোই এখনো একমাত্র ভরসা, যা প্রতিদিনই মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রæত একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে ৩ নম্বর সিংড়া ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাত হোসেন বলেন, বিগত সরকারের আমলে এমপি ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও কাজ হয়নি। চলতি অর্থবছরে নতুন করে আবারও প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রæত কাজ শুরু হবে।
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, সেতু না থাকায় কয়েকটি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। বিশেষ করে বর্ষায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত, রোগী পারাপার ও কৃষিপণ্য পরিবহনে সমস্যা দেখা দেয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রæত উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।