Saturday , 13 September 2025 | [bangla_date]

দুই প্রান্তের গ্রাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে, বীরগঞ্জের রায়হান ও আয়শার সাফল্যের গল্প

বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি/ গ্রামের কাঁচা রাস্তা, টিমটিমে আলো, আর স্বপ্ন দেখার চোখ ,এই জায়গা থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁদের পথচলা। দিনাজপুরের এক প্রান্তের গ্রাম থেকে রায়হান, আর কুড়িগ্রামের আরেক প্রান্তের গ্রাম থেকে আয়শা আজ দুজনেই দাঁড়িয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে।
ডঃ মোঃ রায়হান সাহেব জন্মেছিলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের কল্যাণী গ্রামে। বাবা অফেতুল্ল্যাহ সরকার ছিলেন স্কুল শিক্ষক ও সমাজসেবক, মা রাবেয়া বেগম গৃহিণী। তের ভাইবোনের সংসারে এগারতম সন্তান রায়হান অল্প বয়সেই বাবাকে হারান। শৈশবের সেই দুঃসময় তাঁকে থামাতে পারেনি। মায়ের সাহস, ভাইবোনদের উৎসাহ আর নিজের অধ্যবসায় তাঁকে এগিয়ে নেয়। বীরগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া শিক্ষাযাত্রা শেষ পর্যন্ত পৌঁছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে। সেখান থেকে কৃষিতে স্নাতক ও এগ্রোনমি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ৪০টির বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ২০১৬ সালে পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের হারপার অ্যাডামস বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শুরু করেন, যার একটি বড় অংশ সম্পন্ন হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়, আর্বানা-শ্যাম্পেইনে। ২০২০ সালে পিএইচডি সম্পন্নের পর ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ও উইসকনসিন-ম্যাডিসনে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন। বর্তমানে তিনি ওহাইও সেন্ট্রাল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কৃষি ও জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
অন্যদিকে, ডঃ আয়শা সরকারের জন্ম কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝার গ্রামে। বাবা আব্দুল কাদের সরকার ছিলেন ব্যাংকার, মা আম্বিয়া সরকার গৃহিণী। ছোটবেলায় পড়াশোনার হাতেখড়ি ঢাকার উত্তরা হাই স্কুলে, পরে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে। তারপর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খাদ্য প্রকৌশলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৯ সালে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শি¶কতা শুরু করেন। পরবর্তীতে নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিনগেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফুড টেকনোলজিতে দ্বিতীয় মাস্টার্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি ও জৈবিক প্রকৌশলে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক।
২০০৭ সালে রায়হান ও আয়শার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই সন্তান। তাঁরা শুধু জীবনসঙ্গী নন, গবেষণাসঙ্গীও। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক শ্রদ্ধা , সমর্থন আর নিরলস পরিশ্রমই তাঁদের আজকের সাফল্যের প্রধান শক্তি।
বীরগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যলয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শ্রীমান্ত রায় বলেন,রায়হান ছিল ভষিন মেধাবী ছাত্র। আজ সে যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক হয়েছে, এটা শুধু আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব নয়, পুরো এলাকার গর্ব।
রায়হানের বাল্য বন্ধু ও সাংবাদিক সোহেল আহমেদ বলেন , আমরা একসঙ্গে খেলাধুলা করেছি, পড়াশুনা করেছি। আজ সে যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক এটা ভাবতেই বুকটা ভরে যায়। ওর সাফল্য আমাদের বীরগঞ্জের প্রতিটি তরুণকে স্বপ্ন দেখাতে শেখাবে।
নিজেদের অনুভুতি জানাতে গিয়ে রায়হান বলেন,গ্রামের মাটিতে শিক্ষা আর মায়ের অনুপ্রেরনাই আমাকে আজকের এই জায়গায় এনেছে। আর আয়েশা বলেন,বাংলাদেশের তরুণদের বলবো , স্বপ্ন দেখো আর হাল ছাড়োনা, একদিন সফলতা আসবেই। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রায়হান ও আয়শা এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। গ্রামীন মাটির ছেলে-মেয়ে থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষাজীবনের সোপানে ওঠা এই দুজনের গল্প আজ দেশের জন্য অনুপ্রেরনার এক আলোকবর্তিকা। তাঁদের গল্প প্রমাণ করে অধ্যবসায়, সঠিক দিকনির্দেশনা ও ত্যাগ থাকলে বাংলাদেশের তরুণরাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলো ছড়াতে সক্ষম।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়ায় সাড়ে ৪ বছরের শিশু ধর্ষনের শিকার – ধর্ষক গ্রেফতার

বিরল এক শিশু ম-র্মা-ন্তিক মৃ-ত্যু পরিবারের শো-কের মা-তম

বীরগঞ্জে গ্রামীণ জনযুবদের প্রচারাভিযান

টেবিলে চড়ে দুই শিক্ষকের ঝগড়া,ফেইসবুকে ভাইরাল,উপজেলা জুড়ে সমালোচনা

একদিনে এক কোটি দিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ফুলবাড়ীতে ট্রাক-ভটভটি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত-২

ঘোড়াঘাটে আওযামী লীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বোদায় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা, শিক্ষার্থীর মাঝে উপবৃত্তির অর্থ প্রদান

হরিপুরে পরোয়ানাভূক্ত ৬ পলাতক আসামি গ্রেফতার

ঠাকুরগাঁওয়ে বিচার বিভাগের জাতীয় শোক দিবস পালিত