পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ভ‚তের পা যেমন পেছনে যায় তেমনি নির্বাচন কমিশন পেছনে হাঁটছেন। নির্বাচনে জামানতের টাকা বৃদ্ধি ও খরচের পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে এই নির্বাচনকে বড় লোকের টাকার খেলায় পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। এর জন্য আমরা গণঅভ্যুত্থান করিনি। ৫৪ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা নীতিহীন রাজনীতি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়াম চত্বরে সিপিবি পঞ্চগড় জেলা কমিটির দ্বাদশ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি এবং সকলের ভোটে দাঁড়ানো ও ভোট দেয়ার সমধিকারের নিশ্চয়তা ছাড়া অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব না। কিন্তু আমরা ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করলাম নির্বাচন কমিশন আরপিও সংশোধনের নামে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে জামানতের টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছে, খরচের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আরো নিয়ম কানুন করা হচ্ছে যা সবার ভোটে দাঁড়ানোর সময় সুযোগ নিশ্চিত করবে না। আরপিও সংশোধনীর জন্য রাজনৈতিক দল এবং অন্যান্যদের সাথে কথা বলার প্রয়োজন পর্যন্ত তারা মনে করলো না। এ অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচন কমিশনের কাজও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে। নির্বাচনকে আবার বড় লোকের খেলায় পরিনত করা হবে।
প্রিন্স বলেন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম আকাক্সক্ষা ছিল গণতন্ত্র ও বৈষম্য মুক্তির। অনেকে কাগজে-কলমে লিখে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বৈষম্য মুক্তির নিয়ত কোন আলোচনাই হলো না। দেশের সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা এক উৎকণ্ঠের মধ্য দিয়ে চলছে। মব সন্ত্রাস, আর জোর যার মুল্লুক তার সেই ভাবেই চলছে। দুর্নীতি চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব থেমে নেই। গণ অভ্যুত্থানের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী এবং দেশবিরোধী দেশী- বিদেশি অপশক্তি নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। ঐকমত্যের অনেক বিষয়ে আলোচনা করলেও বৈষম্য নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরী,কৃষক ক্ষেতমজুর এর সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়নি।
তিনি আরো বলেন,দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৪ বছরেও মানুষের মুক্তি আসেনি। সব মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করা যায়নি ।গণতন্ত্র সম্প্রদায়িক বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। অতীতের শাসকগোষ্ঠী যেমন ‘ফেল’ করেছে। আর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি কিন্তু এর পাস এ করতে পারছে না। বরং অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে হাত দিয়ে নতুন নতুন সংকট তৈরি করছে। গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে কমিউনিস্ট পার্টির লাল পতাকাতলে আসার আহŸান জানান তিনি।
এর আগে জাতীয় সঙ্গীতের তালে তালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে সম্মেলন উপলক্ষে সরকারি অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য আসলাম খান, সিপিবি পঞ্চগড়ের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজা খন্দকার চামেলী ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলমসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।