পঞ্চগড় প্রতিনিধি\সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক একেএম ওয়াহিদুজ্জামানের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে তিনি নিজেই বলেছেন ‘আসমানে গিয়ে আল্লাহর দিদার পেয়েছেন তিনি। হুরদের সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলেছেন। এমনকি শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) স্বয়ং এসে তাকে সালাম দিয়ে গেছেন। পেয়েছেন আগাম জান্নাতের আশ্বাস।’ গত সোমবার তার এমন বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায় তিনি আল্লাহর দিদার, কথোপকখন, ফেরেস্তা ও হুরদের নিয়ে বর্ণনা ও মোহাম্মদ (সা.)’র সাথে সাক্ষাতের বর্ণনা দিচ্ছেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা টক অব দ্যা ডিস্ট্রিক্ট্রে পরিণত হয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতা ও মুসল্লিরা। কেউ তাকে বলছেন মানসিক ভারসাম্যহীন, কেউবা তাকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান বলেন, আমাকেও তিনি একই গল্প শুনিয়েছেন। পঞ্চগড়ের কারাতে প্রশিক্ষক সোয়েব আলী সবুজ বলেন, আমি একবার ওই কর্মকর্তার অফিসে গেলে আমাকেও তিনি এমন গল্প শুনিয়েছেন। পঞ্চগড়ের তরুণ সমাজকর্মী মানিক উদ্দীন লিখেছেন, সে একজন মানসিক রোগী। তার জায়গা পঞ্চগড়ে না। তাকে পাবনাতে পাঠাতে হবে। ডা. রেজওয়ান রেজা লিখেছেন, হয় সে একজন ভন্ড প্রতারক না হলে চরম বিকারগ্রস্ত মানসিক রোগী। আল্লাহ মানুষকে এ ধরণের প্রতারক থেকে হেফাজত করুন।
নুরে মদিনা ক্বেরাতুল কুরআন মডেল মাদরাসার শিক্ষক এইচ এম লিয়াকত আলী বলেন, মুসা (আ.) আল্লাহর নুর দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। আর এই কর্মকর্তা বলছেন তিনি আল্লাহকে দেখেছেন এবং নবী (সা.) এসে তার সাথে সাক্ষাত করে গেছেন। এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর কিছু হতে পারে না। এভাবে কথা বলে তিনি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একেএম ওয়াহিদুজ্জামান ২০২০ সালে রাজশাহী থেকে বোদা উপজেলায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। শাস্তিমূলক বদলি হলেও তিনি এসে গল্প ফাঁদেন আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে তিনি পঞ্চগড়ে যোগদান করেছেন। এরপর চলতে থাকে তার আধিপত্য। বোদা উপজেলার পাশাপাশি তিনি দেবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক (অ.দা.) হিসেবে কর্মরত হয়েছেন।
পঞ্চগড় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অ.দা.) একেএম ওয়াহিদুজ্জামান গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আল্লাহ ও নবী মুহাম্মদ (সা.) কে আমি দেখেছি কথাও বলেছি। আল্লাহ আমাকে বলেছেন তুই এতো চিন্তা করিস কেন? আমি তোর পাশে আছি। এমনকি এক রমজান মাসে আসরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে দেখি মুহাম্মদ (সা.) নেমে এসে আমাকে সালাম দিয়ে পরিচয় দিলেন। আমি আবেগে কেঁদে ফেলেছিলাম। আসমান থেকে ইশারা আসায় আমি দাঁড়ি রেখেছি ও সিগারেট ছেড়েছি।