রোববার মহালয়ার মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ সূচনা হবে। দেবীদুর্গা এবছর হাতিতে চড়ে আসবেন আর দেবী গমন করবেন পালকিতে চড়ে। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর দুর্গাপূজা চলবে। এবছর ব্যক্তি ও গ্রামবাসীর উদ্যোগে পার্বতীর উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ পরিসরে বড় বাড়ীর দুর্গাপূজাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা মাঝাপাড়া গ্রামে রামপুরা মাঝাপাড়ায় নতুন শারদীয় দূর্গা মন্ডপ। এটাই প্রথম বৃহৎ পরিসরে দুর্গা উৎসব মানেই বড় বাড়ির বড় দুর্গাপূজা। আলোকসজ্জার ক্ষেত্রে রয়েছে নুতনত্ব। দিল্লির স্বামী-নারায়ন অক্ষরধাম মন্দিরের আদলকে ধারন করে নিজস্ব আর্কিটেকের ডিজাইনের সংমিশ্রনে মূল গেটের ডিজাইন করা হয়েছে। এবছর ওই মÐপে ২৫টি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। পুরো পুঁেজা মন্ডপ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ, শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ও সিসি ক্যামেরা। থাকবে অতিথি ও দর্শনার্থীদের জন্য আপ্যায়ন ব্যবস্থা।
এব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা মাঝাপাড়া নতুন দূর্গাপুজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি তপন কুমার দাস দাবি করেছেন, এটি প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে এবছর পার্বতীপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় পূজামÐপ। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ ও গ্রামবাসীর সম্মিলিত ভাবে জামজমকপূর্ণ এই বড় পরিসরে দুর্গাপূজার আয়োজন। পূজার স্থানসহ আশপাশের এলাকার আলোকসজ্জার মাধ্যমে এক মায়াবী রূপ দেওয়া হয়েছে। সামনে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকারের সুসজ্জিত তোরণ। এই বিশাল আয়োজনে প্রায় ১০ লাখ টাকার উপরে ব্যয় ধরা হয়েছে।
‘থিমে’ দেখানো হবে দেবীদূর্গার আখ্যান যেখানে দেবীদূর্গা এবং দুর্গম নামক অসুরের পৌরাণিক কাহিনীর প্রদর্শিত করা হবে। আর এই থিমে মূল পরিচালনায় থাকবেন বোন শ্রেষ্ঠা দাস পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স ফাইনাল ও ভাই সৌম্যদ্বীপ বিশ্বাস বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথম বর্ষের ছাত্র। সবমিলে মাঝাপাড়া বড়বাড়ীর বড় দূর্গাপুজা থাকছে নুতনত্ব।
মালী দীনবন্ধু রায় বলেন, ধর্মগ্রন্থ বেদ এবং পুরানের কাহিনী অবলম্বনে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। ১ মাস ধরে ১২/১৫জন কারিগর তাদের নিপূণ হাতে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছেন। শেষ সময়ে রং তুলির কাজ পুরোদমে চলছে। এসময় আমাদের দম ফেলার সময় নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা বিথী রায় বলেন, বড় বাড়ির এমন দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য আমরা দারুণ খুশি। আমরা সব ধর্মের মানুষ এই দুর্গোৎসবে মিলিত হই। দুর্গোৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, তার জন্য আমরা গ্রামবাসী সবাই সহযোগিতা করেছি।
আয়োজক তপন কুমার দাস বলেন, এই প্রথম বড়সড় দুর্গাপূজার আয়োজন করি। স্থানীয় লোকজনের উৎসাহে প্রতিমার সংখ্যা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা দুর্গাপূজা দেখতে আসবে বলে আশা করছি। সকল ধর্মের মানুষের এক মিলন মেলায় পরিণত হয় দুর্গোৎসব।
পার্বতীপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কৈলাশ প্রসাদ সোনার বলেন, উপজেলায় ১৩৮ মÐপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের মত এবছরও জাঁকজঁমক পূর্ণভাবে উদযাপিত হবে। পার্বতীপুরে বড় বাড়ীর বড় পরিসরে আয়োজন করেছে বড় দুর্গাপূজা। বড় বাড়ির পূজাটি আকর্ষণীয় হওয়ায় এখানে দর্শণার্থীদের বিপুল সমাগম ঘটবে। উৎসবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: সাদ্দাম হোসেন বলেন, এবছর ১৩৮টি মÐপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পার্বতীপুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা করা যাবে না এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব শেষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।