বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে শিশু মোসলেম (০৯) বই-খাতা-কলমের বদলে ঘুরে ঘুরে আমড়া বিক্রি করে পরিবার চালাচ্ছে।
প্রতিদিন সকালে বের হয়ে বিকেলে বাড়ি খরচ নিয়ে ঘরে ফেরা হয় তার। উপজেলার সুইচ গেটে এলাকার একটি বাড়িতে দাদিকে নিয়ে থাকে মোসলেম। শুক্রবার সকালে ব্যাপক লোকসমাগম যানজট পণ্য বীরগঞ্জ পৌর শহরের মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসে পথে আমড়া বিক্রির সময় মোসলেম এর কথা হয়। সে জানায়, তার পিতা আলমগীর হোসেন আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করছেন। তাদের খোঁজ-খবর তিনি নেন না। তার মাও বিয়ে করে সংসার নিয়ে অন্যত্র থাকে। ছোট একটি বোনকে নিয়ে । বর্তমানে অসুস্থ দাদি তাকেই দেখাশুনা করতে হচ্ছে। জীবিকা নির্বাহে মহাজনের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১থেকে ১৫০টি আমড়া একটি পাত্রে পদ্মফুলের পাপড়ির মতো সুন্দর করে কেটে বিক্রি করছে। এতে তার তিন থেকে সাড়ে তিনশ টাকা লাভ হয়। এ টাকায় তার দাদির ওষুধ ও তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে কোনভাবে। লেখাপড়া না করতে পারায় তার মনে বিরাট আক্ষেপ।
শিশু মোসলেম জানায়, উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভোগডোমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো সে। সেও তিন বছর ধরে বন্ধ হয়ে গেছে। লেখাপড়া করতে পারলে সে চাকরি নিয়ে সম্মানের সাথে জীবন যাপন করুন করতে পারতেন। কিন্তু তার এ পথ বন্ধ। কারণ ভোরেই তাকে ঘর থেকে বের হয়ে ঘুরে ঘুরে আমড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। শিশু মোসলেম পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুর আমড়া বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে এই সংবাদ পেয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ। ইউএনও তানভীর আহমেদ আন্তরিকভাবে শিশু মোসলেম এর কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে শুকনো খাবার নগদ প্রদান করেন। এবং শিশুটি পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে লেখাপড়ার
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহিদুল ইসলাম বলেন,শিশুটি বাবা নিজেও আমড়া বিক্রি করতেন। তার বাবা-মায়ের দুই বছর পূর্বে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে অভাবের সংসারে শিশু বয়সেই স্কুলে যাবার বদলে পথে পথে আমড়া বিক্রি করতে হচ্ছে শিশু মোসলেম কে।
মোসলেম জানায়, আষাঢ়ের শেষ থেকে আশ্বিন মাসের শেষ পর্যন্ত আমড়ার ভরা মৌসুম। কখনো কার্তিকেও পাওয়া যায়। তাই এই সময় পর্যন্ত সে আমড়া বিক্রি করে।
এর আগে তার বাবা- মা বিভিন্ন স্থানে কাজ করে পরিবার চালাতেন। বর্তমানে বাধ্য হয়ে তাকে এ পেশায় নামতে হয়েছে।