Monday , 15 September 2025 | [bangla_date]

বেশি লাভের আশায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষ

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\স্বাভাবিকভাবে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে শীতকালীন সবজি ফসল ওঠানো হয়। কিন্ত ওই সময় আমদানী বেশী হওয়ায় কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পায় না। এদিকে বর্তমানে বর্ষার শেষে বাজারে সবজির অপর্যাপ্ততা তৈরি হওয়ায় দামও বেশি, চাহিদাও থাকে বেশি। সব কিছু মাথায় রেখে আগাম সবজি চাষে ঝুকেছেন কৃষকরা।
দেশের শস্য ভান্ডার খ্যাত দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ শুরু হয়েছে। এখনও শীত মৌসুম শুরু না হলেও এখানকার চাষিরা কিছু কিছু শীতের সবজি বাজারে তুলতে শুরু করেছে। উপজেলায় বিভিন্ন মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। বাজারেও উঠেছে কিছু আগাম শীতকালীন সবজি। তবে দাম অনেক চড়া। আমদানী কম, দাম বেশি এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার শিবনগর, আলাদীপুর, খয়েরবাড়ী, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকাজুড়ে আবাদ হচ্ছে- শিম, মুলা, ফুলকপি, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, করলা, কাকরোল, লাউ, লালশাক, ধনিয়াপাতা ইত্যাদি আগাম শীতকালীন সবজি ।
উঁচু জমিগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন, এতে মুখে হাসি ফুটেছে তাদের।
ভালো দাম পাওয়ার আশায় তারা শীতের আগেই যাতে শীতকালীন সবজি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে পারে। সেই প্রচেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। এতে চাষিরা প্রতিবছরই লাভবান হচ্ছেন। ‘সবজির আগাম চাহিদা মাথায় রেখে ফলানো হচ্ছে নানান জাতের সবজি।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে আলাদীপুর ইউনিয়নের ছোট ভিমলপুর গ্রামে দেখা মেলে কৃষক হামিদুল ইসলাম ফুলকপির জমিতে গাছগুলোতে স্প্রে করছেন।
এসময় তিনি জানান, এবার ৩৫ শতাংশ জমিতে আগাম জাতের কপি চাষ করেছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কপি বাজারজাত করতে মোট খরচ হবে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। ২০-২৫ দিনের মধ্যে বাজারে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি কপির পাশাপাশি শীম ও শসা চাষ করেছেন। হামিদুল বললেন, গত বছর এই জমিতেই ২ লাখ ২০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছিলাম। এবারও ভালো কিছু আশা করছি।”
পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক মশিউর ৩০ শতাংশ জমিতে কপি আবাদ করেছেন। তিনি জানালেন, ২৫ দিনের মধ্যেই বাজারে তুলতে পারবো। মৌসুমের শুরুতে সবজির দাম সবসময় বেশি থাকে। এতে করে লাভের আশা করছেন তিনি।
আলাদীপুর ইউনিয়নের ভিমলপুর গ্রামের সবজি চাষী আলামিন হোসেন বলেন, এবার ৮০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চারা রোপন করেছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সে গুলো বাজারজাত করতে পারবেন এবং দামও ভালো পাবেন বলে আশা করছেন।
তিনি বলেন, ‘যে কোনো সবজি যদি মৌসুমের শুরুতে বাজারে তোলা যায়, তবে তার দাম বেশি পাওয়া যায়। এরইমধ্যে আগাম জাতের শিম, মুলা, লালশাক, পুঁইশাক, করলা, পালংশাক,বরবটি,টমেটো,শসা উঠতে শুরু করেছে। পর্যাপ্ত দামও পাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি অফিসে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজির চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগাম জাতের সবজির লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া এবার আলু চাষের জন্য লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১হাজার ৮১০ হেক্টর। আগাম জাতের আলু চাষের
লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে হেক্টর জমিতে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানুর রহমান বলেন, আগাম সবজি চাষ লাভজনক। যেকোনো সবজি যদি মৌসুমের আগে বাজারে তোলা যায়, তবে তার দাম বেশি পাওয়া যায়। তাই অনেক চাষি আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন। এখানকার সবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন জেলায় যায়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিকপদ্ধতিতে সবজি চাষ ও রোগবালাই দূর করার জন্য সার্বক্ষনিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত