দিনাজপুর খাদ্য অধিদপ্তরের উপ-খাদ্য পরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে দু’টি ডিভাইসহ এক পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।
পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সন্দেহজনক ভাবে কয়েকবার কাশী দেওয়ায় কর্তব্যরতদের সন্দেহ হলে তাকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়।
শনিবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুর শহরের কসবা এলাকায় কেরী মেমোরিয়াল হাই স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে ওই কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
আটক পরীক্ষার্থী কৃষ্ণকান্ত রায় (২৫), দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সিঙ্গুল পূর্ব রাজারামপুর গ্রামের আশুতোষ রায় এর পুত্র।
আটক কৃষ্ণকান্ত গতবছর দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। সে দিনাজপুর শহরের ফকিরপাড়া এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকেন।
জালিয়াতির প্রক্রিয়া বর্ণনা করে ওই পরীার্থী বলেন, পরীক্ষা শুরুর এক থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে চক্রটির হাতে হোয়াটস-অ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্রটি চলে আসে। শহরের ফকিরপাড়া ও সুইহারি এলাকায় দু’টি ছাত্রাবাসে কোচিং সেন্টারের কয়েকজন শিক্ষক বিভিন্ন সেটের প্রশ্নগুলোর উত্তরপত্র প্রস্তুত করেন। এর মধ্যে ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্নের সেট নম্বর জেনে নেয় চক্রটি। পরে ক্রম অনুযায়ী প্রশ্ন গুলোর উত্তর (ক, খ, গ, ঘ) বলতে থাকে। পরীক্ষার্থী শুনে শুনে তৎক্ষনাৎ প্রশ্নপত্রে বিশেষ দাগ দিয়ে উত্তরগুলো চিহ্নিত করেন। পরে ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করেন।
এ ব্যাপারে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম হাবিবুল হাসান জানায়, জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত এক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে থেকে তাঁর ভাইসহ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি বড় একটি চক্র। আমরা পুরো চক্রটি ধরতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান শুরু করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যথাযথ আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করছি।
দিনাজপুর সদর কোতয়ালী থানার ওসি পরিদর্শক মোঃ নুরুজ্জামান জানায়, আটক কৃষ্ণকান্ত রায়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার চাকরীর পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত ঢাকার একটি চক্রের মাধ্যমে এসব ডিভাইস নিয়ে সে আজ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বসেছিলেন। যোগাযোগ ডিভাইসের অন্য প্রান্ত থেকে তাঁকে বলা হয়েছিল, প্রশ্নের সেট ‘পদ্মা’ হলে যেন কাশি দেন। বিষয়টি বুঝতে না পেরে বারবার কাশি দিতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল, ওই কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থী ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। কিন্তু সেটি কে এবং কোন পরীক্ষার্থী অস্পষ্ট ছিল। আমরা ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারি রেখেছিলাম। পরে ১০১ নম্বর রুমের ওই শিক্ষার্থীর প্রতি সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে আমরা তাঁকে তল্লাশি করি এবং সত্যটি বেরিয়ে আসে।

















