কাহারোল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ বাংলা বর্ষ পঞ্জিকা মতে বর্তমানে চলছে বাংলা সনের কার্তিক মাস। এক সময় আশ্বিন ও কার্তিক মাসকে বলা হতো মঙ্গার মাস। এখন আর মানুষ এ দুই মাসকে মঙ্গা বলে না। বর্তমানে এ দুই মাস শ্রমজীবি মানুষেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই করে। গত ৩০ অক্টোবর’২৫ বৃহস্পতিবার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা ও জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে আগাম জাতের ধান কাটছেন শ্রমজীবি মানুষজন। প্রতিদিন সকাল বেলা থেকে বিকেল বেলা পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। বর্তমান বাজারে ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা কৃষকের বাড়ি থেকে ধান ক্রয় করছেন মণ প্রতি ১১ শত ৫০ টাকা থেকে ১২শত টাকা পর্যন্ত। ওই দিনেই উপজেলার ডাবোর ইউনিয়নের জয়নন্দ হাটে ধান বিক্রেতা কৃষক মো:শফিউর রহমান এক বিঘা জমিতে বিনা জাতের ধান-৭৫ প্রতি বিঘায় ৩৪ মণ করে ফলন পেয়েছেন তিনি। প্রতি মণ ধান বাজারে বিক্রি করলেন মণ প্রতি ১২শত টাকা দরে। ওই হাটে আসা অপর ধান চাষী কৃষক ধীরেন্দ্র নাথ রায় জানান, তিনি বিনা জাতের-৭ ধান চাষ করেছেন। কিন্তু বিঘা প্রতি ৩২ মণ করে ধান পেয়েছেন। তিনি বাজারে ১১শত ৭৫ টাকা দরে মণ প্রতি ধান বিক্রি করেছেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত আগাম জাতের ধানগুলো হলো বিনা-৭, ব্রী ধান-৩৩, ব্রী ধান-৫৬, ব্রী ধান-৬২, বিনা ধান-৭৫ সহ আরো নতুন নতুন জাত এবার জমিতে লাগানো হয়েছে। চারার বয়স ২৫ দিন হলেই বীজতলা থেকে তুলে জমিতে লাগানো হয়ে থাকে। এসব ধান ৯০ দিন থেকে ১১০ দিনের মাথায় জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তোলা যায়। আগাম জাতের ধান চাষাবাদ করে আগাম জাতের আলু, শাক-সব্জি, সরিষা, ভুট্টা সহ বিভিন্ন ধরণের ফসলাদি চাষাবাদ করা যায়। একই জমিতে ৩ ফসল আবাদ করা যাচ্ছে। ধানের দাম ও খড়ের দাম ভালো পাওয়ায় দিন দিন আগাম জাতের ধান চাষাবাদ ক্ষেত্রে আগ্রহী হয়ে উঠছে এই উপজেলার কৃষকরা। আগাম জাতের ধান কাটা, মাড়াই করে তারা জমিতে নতুন ফসল আবাদের জন্য প্রস্তুতি নিতে দেখা যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৩ শত ৪০ হেক্টর জমিতে। উপজেলা কৃষি অফিসার মল্লিকা রাণী সেহানবীশ এই প্রতিনিধিকে জানান, এ উপজেলার কৃষকরা আগাম জাতের ধান চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আমরাও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। আগাম জাতের ধান চাষ হওয়ায় বাজারে চালের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। কৃষকরা আগাম জাতের ধান প্রতি বিঘায় ১৮ থেকে ২০ মণ করে ফলন পাচ্ছেন । আগাম জাতের এ ধরনের ধান ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলা যায় বলে তিনি জানিয়েছেন।

 
                    







 
                                    



 
                                            


