দিনাজপুর পিবিআই অফিসে ২৯ অক্টোবর বিকেলে এডিশনাল ডিআইজি সংবাদ সম্মেলন করেন।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ডাকেশ্বরী গ্রামের প্রাণ দাস (২৫)-এর মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যা বলে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দিনাজপুর জেলা।
মামলাটি বীরগঞ্জ থানার নং-১০, ২০অক্টোবর ধারা ৩০২/৩৪ দÐবিধি, জিমার-২২৯/২০২৫ (বীরগঞ্জ)।
বুধবার বিকালে প্রেস ব্রিফিং এ পিবিআই দিনাজপুরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, মামলার বাদিনী মৃতের মা সারতী রাণী দাস (৫৪), পেশায় দিনমজুর। তিনি জানান, তার ছেলেকে হত্যা করা হলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। অসহায় এই মা ন্যায়ের আশায় পিবিআই দিনাজপুর অফিসে অভিযোগ করলে, তদন্ত শুরু করেন এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ মেহেদী হাসান এর নেতৃত্বে একটি চৌকস তদন্ত টিম।
তদন্তে উঠে আসে, গত ২৫ এপ্রিল প্রাণ দাসের শ্বশুরবাড়ি খুজরবাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করে, তিনি ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে বীরগঞ্জ থানায় অপমৃত্যু মামলা নং-১৭, তারিখ ২৫/০৪/২০২৫ রুজু হয়।
কিন্তু মৃতের মা সারতী রাণী দাস ৩১জুলাই পিবিআই দিনাজপুরে হাজির হয়ে জানান, আমার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলে সে বিষ খেয়েছে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না। আমরা থানায় কোনো ইউডি দিইনি। ন্যায়বিচারের আশায় পিবিআইতে এসেছি।
পিবিআইয়ের তদন্তে প্রমাণিত হয়, প্রাণদাস আত্মহত্যা করেননি; তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়।
তদন্তে জানা যায়, দিপু রায় (২২), তার বোন পূজা রাণী দাস (১৯),তাদের মা জোসনা রাণী (৪৫) এবং বাবা নিপেন্দ্র নাথ রায় (৫০), এই চারজনই প্রাণ দাসকে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করে। ২০ অক্টোবর সারতী রাণী দাস বীরগঞ্জ থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যা মামলা দায়ের করেন।পিবিআই দিনাজপুর জেলা একই দিন চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে আদালতের অনুমতিক্রমে আসামি দিপু রায় এবং পূজা রাণী দাসকে পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে। দিপু রায়ের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে তার শয়নকক্ষ থেকে একটি ইট তৈরির ফার্মা ও খাট জব্দ করা হয়। দিপু রায় স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে বলে পিবিআই জানায়।
পিবিআই দিনাজপুরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন: আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তদন্ত করে নিশ্চিত হয়েছি-প্রাণ দাসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সত্য উদঘাটনে পিবিআই সফল হয়েছে।
তদন্ত পরিচালনা ও তত্ত¡াবধান: তদন্ত কর্মকর্তা: এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ মেহেদী হাসান, পিবিআই, দিনাজপুর

















