বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
২৩ অক্টোবর বৃস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ প্রেসক্লাব হল রুমে অনাকাঙ্ক্ষিত মানববন্ধনের বিপরীতে বেইস ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী ভাতগাঁও শাখার
পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে এলাকার সুনামধন্য এনজিও বেইস মিতালী ভাদগাঁও শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানান, গত ১২/১০/২০২৫ ইং তারিখে বেইস ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী ভাতগাঁও শাখার কতিপয় ঋনী সদস্য ও কিছু সংখ্যক এলাকাবাসী কর্তৃক মানববন্ধন করা হয়েছ, সেই প্রসঙ্গে সংস্থার স্পষ্ট বক্তব্য।
সাংবাদিকদের সকলকে এই সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত জানিয়ে সকলের সদয় অবগতির জন্য জানানো হয়, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি এডুকেশন (বেইস) একটি বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান (এনজিও)।
১৯৭৭ সালে কতিপয় বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি দ্বারা এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
বেইস একটি জাতীয় পর্যায়ের বে-সরকারী স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) কর্তৃক নিবন্ধিত।
বেইস প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, গণ শিক্ষা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রী উপবৃত্তি ও কারিগরী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচী সুনামের সাথে বাস্তবায়ন করে আসছে।
অত্র সংস্থা দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলায় ১৯৯০ সাল হতে ০৬ (ছয়) বছর মেয়াদী (জানুয়ারী ১৯৯০ হতে ডিসেম্বর ১৯৯৫) মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাত্রী উপবৃত্তি প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করে- যা সারা দেশব্যাপী জাতীয় কর্মসূচী হিসাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত হয়ে আসছে।
উপবৃত্তি প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের পরে ১৯৯৪ সাল হতে বেইস দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে নিম্নবর্নিত কর্মসূচীসমূহ বাস্তবায়ন করে আসছে।
উল্লেখ যে, অত্র সংস্থা (বেইস) দিনাজপুর জেলা ছাড়াও ৬টি জেলায় স্বাস্থ্য সেবাসহ অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে।
ক) প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচীঃ বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলায় ১০০টি (বর্তমানে চালু ৭৫টি) প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৫৬,৩৭৮ জন শিশুকে এক বৎসরে প্রথম শ্রেনীতে ভর্তির জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
খ) কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচীঃ বেইস মিতালী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অত্র এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বীরগঞ্জ উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত বেইস মিতালী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯,১৪২ জন বেকার, অর্ধ-শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে সেলাই, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, অটোমোবাইল এবং কম্পিউটার ও আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশই দেশে ও বিদেশে কর্মে নিয়োজিত রয়েছে।
গ) ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচীঃ বেইস ১৯৯৫ সাল হতে বীরগঞ্জ ও কাহারোল কর্ম এলাকায় হত দরিদ্রদের মাঝে ঋণ কার্যক্রম চালু করে। পরবর্তীতে এলাকার চাহিদার প্রেক্ষিতে ও মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ঋণ কর্মসূচীকে আরো সু-শৃংঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য বীরগঞ্জ ও কাহারোল এলাকায় ০৫টি স্বতন্ত্র ব্রাঞ্চ স্থাপন করা হয়। ঋণ কার্যক্রম ২০১৫ সাল হতে শাখাওয়ারী চালু রয়েছে। শাখাসমূহ যথাক্রমে (১) বীরগঞ্জ শাখা (২) কবিরাজহাট শাখা, (৩) ভবানীপুর ডাঙ্গারহাট শাখা, (৪) ভাতগাঁও শাখা এবং (৫) কাহারোল শাখা।
উক্ত ঋণ কার্যক্রমে বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলায় সর্বমোট ৭,৪৪৪ জন ঋণী বা সুবিধাভোগী সদস্য রয়েছে। উল্লেখিত কর্মসূচীগুলি দাতা সংস্থার অনুদান ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/ব্যুরো কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, এবং সেই ধারাবাহিকতায় বীরগঞ্জ ও কাহারোল এলাকায় বেইসের সকল কার্যক্রম অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পরিচালিত হয়ে আসছে।
ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচীর আওতায় একজন ঋণ সুপারভাইজার জনাব জান্নাতুল ফেরদৌস গত ২৬/১২/২০১৯ ইং তারিখে ভাতগাঁও যোগদান করেন। পরবর্তীতে ঋণ কর্মসূচীর নিয়ম অনুয়ায়ী গত ০৩/০৮/২০২৫ইং তারিখে জান্নাতুল ফেরদৌসকে কাহারোল বদলী করা হয়। কিন্তু ০৪/০৮/২০২৫ তারিখে তিনি কর্মস্থল কাহারোল শাখায় অনুপস্থিত থাকলে মোবাইল ফোনে এবং শ্রীতে জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে তাঁর বাড়ীতে গিয়ে যোগাযোগ করে সংস্থার নিকট হিসাবপত্র বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু জান্নাতুল ফেরদৌস কোন রকম যোগাযোগ করেন নাই।
অপরদিকে তার বিরুদ্ধে দলের সদস্যবৃন্দ তাদের নিকট হতে টাকা গ্রহনের টি অবহিত করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রসমূহ যাচাই করলে প্রাথমিক তদন্তে যা লক্ষ্য করা যায় তা নিম্নরূপ-
১১. সদস্যদের নিকট হতে সঞ্চয় ও কিস্তির টাকা আদায় করে পাশ বইতে লিখিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু আদায়কৃত সমপরিমান অর্থ সংস্থার হিসাব শাখায় জমা করেন নাই। যার সদস্য সংখ্যা ১৭ (সতেরো) জন এবং টাকার পরিমান ২,০২,৮৫৯/-(দুই লক্ষ দুই হাজার আটশত ঊনষাট) টাকা।
২. এছাড়াও কিছু সদস্যের অভিযোগ অনুয়ায়ী ঋণ সুপারভাইজার জনাব জান্নাতুল ফেরদৌস তাদের নিকট হতে টাকা গ্রহণ করেছেন কিন্তু পাশ বইয়ে উল্লেখ করেন নাই এবং অফিসের হিসাব শাখায় জমা করেন নাই।
এখানে উল্লেখ যে, কোন কর্মী সমিতিতে সঞ্চয় ও ঋণের কিন্তুি বাবদ গ্রহণকৃত অর্থ পাশ বইয়ে এন্ট্রি হলো কিনা তা পাশ বইয়ের নিয়ম অনুযায়ী উক্ত সদস্য দেখে নিশ্চিত করবেন। কিন্তু সদস্যগণ পাশ বইয়ে এন্ট্রি হলো কিনা তা দেখেন নাই। যার সদস্য সদস্যা সংখ্যা ১২ (বারো) জন এবং টাকার পরিমান ৫,১৮,৬৮০/- (পাঁচলক্ষ আঠারো হাজার ছয়শত আশি) টাকা।
৩. সুরক্ষা সঞ্চয় স্কীম (এসএসএমস) নামে একটি স্কিম চালু ছিল যা পরবর্তীতে এমআরএ এর সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক বন্ধ করা হয় এবং সদস্যদের অর্থ ফেরত দেয়া হয়।
ভবিষ্যতে এই ধরনের খাতে টাকা জমা না নেয়া এবং দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সে মোতাবেক সকল সদস্যদের অবহিত করা হয়েছে। তারপরেও অফিসে উপস্থিত না হয়ে, কোন প্রমান ছাড়াই সুপারভাইজার জান্নাতুল