বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে রোপা-আমন ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এ উপজেলায় গত বুধ বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আমন ধানের পাকা গাছ নুয়ে পড়েছে। এতে করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। একই সঙ্গে শীতকালীন আগাম শাক-সবজিসহ বিভিন্ন রবিশস্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরে তোলার ঠিক আগে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বহু আমন খেতের পাকা ও আধা-পাকা ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এতে ফলন হ্রাসের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এ ছাড়াও, শীতকালীন আগাম শাক-সবজির খেতও ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। ঝড়ো বৃষ্টির পর অনেক এলাকায় আমন খেতের পচন ও পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে দুশ্চিন্তা আরো বাড়িয়েছে কৃষকদের।
উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের কৃষক মনোরঞ্জন রায় জানান, গত তিন-চার দিনের ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়ায় তিনি ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
কৃষক সুজালপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের সতীশ বর্মন বলেন, চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। চার একর জমিতে আমন আবাদ করেছেন। এখন ধান কাটার সময়, অথচ বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেল। জমিতে পানি জমে শীষ ভিজে যাচ্ছে। এতে ফলন
অর্ধেক হয়ে যেতে পারে।
দামাইক্ষত্র গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, যে ধান গাছগুলো নুয়ে পড়েছে, তাতে কয়েকদিনের মধ্যেই পোকা ধরবে। তখন ধান চিটা হয়ে যাবে।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বীরগঞ্জ উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। হেক্টর। এর মধ্যে হাইব্রিড ২৮ হেক্টর, উফশী জাত এবং স্থানীয় জাতের চাষ হয়েছে । চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ শত ৬৬ মেট্রিক টন।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে এ পরিস্থিতিতে যেসব জমিতে ধান নুয়ে পড়েছে সেগুলো গোছা করে বেঁধে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। এতে ক্ষতি কিছুটা কমবে। তিনি আরও জানান, নিচু জমিতে পানি জমাট বেঁধে থাকলে খেতের পচন
এবং কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। তবে বৃষ্টি কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে।
…………………………..


















