Monday , 29 December 2025 | [bangla_date]

ঘোড়াঘাটে দারিদ্র্যের বাস্তব চিত্র বৃদ্ধা ফুলমণি মুর্মুর মানবেতর জীবন

দিনাজপুর (ঘোড়াঘাট) প্রতিনিধিঃদিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বেলওয়া গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকা ছাতনি পাড়ায় নীরবে কষ্ট বয়ে চলেছেন আদিবাসী বৃদ্ধা ফুলমণি মুর্মু। আনুমানিক ৯০ থেকে ৯৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা বয়সের ভারে নুয়ে পড়া শরীর আর অনিশ্চিত আগামীর ভয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সন্তান থাকা সত্তে¡ও অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। সরকার থেকে পাওয়া সামান্য বয়স্ক ভাতা তার জীবনের ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ করতে পারছে না।
ফুলমণি মুর্মু কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলেন, “আমাকে কেউ দেখাশুনা করে না। নাতি একটু কাজকর্ম করে যেটুকু খরচ করে নিয়ে আসে, তা দিয়েই আমি অনেক কষ্ট করে রান্না করে খাই।” কথাগুলো বলতে গিয়ে তার চোখে জমে ওঠে দীর্ঘদিনের বেদনা। ফুলমণি মুর্মুর জীবনের শেষ সম্বল এখন তার ১১-১২ বছর বয়সী নাতি স্যামুয়েল হেমব্রম। যে বয়সে স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকার কথা, সেই বয়সেই জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টুকটাক কাজ করা আর গরু-ছাগল চরিয়ে যে সামান্য আয় করে, তা দিয়েই চলে দাদি-নাতির দিন। শিশুশ্রমের ওপর ভর করেই টিকে আছে এই ভগ্নস্বপ্নের সংসার।
স্থানীয় বাসিন্দা ছোট মুর্মু জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে ফুলমণি মুর্মুর স্বামী তরু হেমব্রম মারা যান। এরপর থেকেই জীবনের কঠিন সংগ্রাম শুরু হয় তার। চার ছেলে ও দুই মেয়ের সংসারে এক সময় মুখরতা থাকলেও আজ সেই ঘর নিঃস্ব। কিছুদিন আগে এক ছেলে মারা গেলে আরও বেশি অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। বর্তমানে জীবিত তিন ছেলে ও দুই মেয়ে থাকলেও কেউই বৃদ্ধা মায়ের খোঁজ নেন না। মৃত ছেলের একমাত্র সন্তান স্যামুয়েলকেই আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন ফুলমণি মুর্মু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বসতঘরটি দারিদ্র্যের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরের টিনে মরিচা ধরে একাধিক স্থানে ভেঙে পড়েছে, মাটির দেয়াল ক্ষয়ে গেছে। বৃষ্টি নামলেই ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে পানি। মেরামত করার মতো কোনো আর্থিক সামর্থ্য নেই তার। ঘরের বারান্দায় একটি পুরোনো চৌকি পেতে নাতিকে নিয়ে কোনো রকমে রাত যাপন করেন তিনি। মাথার ওপর টিনের ছাদ থাকলেও সেখানে নেই নিরাপত্তা, নেই স্বস্তি।
এ সময় নাতি স্যামুয়েল বাড়িতে ছিল না। কাজের সন্ধানে বাইরে গিয়েছে সে। বারান্দায় বসে ছিলেন ফুলমণি মুর্মু-চোখে শূন্যতা, মুখে নীরবতা। কথা বলতে চাইলে ঠিকভাবে বলতে পারছিলেন না তিনি। দীর্ঘদিনের অভাব, অনাহার আর জীবনের কঠিন বাস্তবতা যেন তার কণ্ঠস্বরও কেড়ে নিয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই অসহায় বৃদ্ধা ও তার নাতির পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ২নং পালশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবিরুল ইসলাম প্রধানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম রবিন জানান, বয়স বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতা ছাড়া সরকারি অন্যান্য কোনো সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ রানার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বর্তমানে সরকারি বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত থাকায় বিধি অনুযায়ী তাকে অন্য কোনো ভাতার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্ভাব্য সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনার জন্য চেষ্টা করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবানা তানজিন বলেন, “বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। এটা অত্যন্ত মানবিক ও দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

বীরগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ

হরিপুরে হাজারো তরুন ও নারীদের সমাবেশে

অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ২ বাংলাদেশী আটক

তদারকি নেই|| রাণীশংকৈলে ৪০ দিনের কর্মসূচি কোন কাজে আসছেনা সরকারের

ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালি করতে হবে –রমেশ চন্দ্র সেন এমপি

ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রবেশমুখে ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ ভেন্ট বিশিষ্ট কালভার্ট ও সংযোগ সড়ক উদ্বোধন

জাতীয় পরিসংখ্যান দিবসের র‌্যালী শেষে আলোচনা সভা

দিনাজপুরে নজরুল পরিষদের উদ্দ্যেগে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যবার্ষিকী পালিত

চিনিকলের জমি সম্পদ লুটপাট ও ষড়যন্ত্র রুখতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ঠাকুরগাঁওয়ে সমাবেশ

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই