এক অনন্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে। “এসো আমাদের আঙ্গিনায় বসো নতুন সূর্যের আলোয় ভাগ করে নাও শ্বাস” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ১২ ডিসেম্বর সকালে এফপিএবি মিলনায়তনে শুরু হয় দিনব্যাপী কবিতা, সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তির উৎসব।
সংগঠনের সভাপতি সুবর্ণা মুখারর্জী সহ-সভাপতি মুনিরা শাহনাজ চৌধুরী কেয়া এবং সাধারণ সম্পাদক কাদিরা চৌধুরী লাজুর পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনায় পুরো আয়োজন হয়ে ওঠে সুশৃঙ্খল, বর্ণময় ও প্রাণোচ্ছ¡ল।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব পরিচালনা করেন জোহরা তাবাসসুম মৌ ও দীপু রায় দেব। বিজয়ের মাসের আবহে দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল কর্মসূচি। সারাদিনজুড়ে একক, দ্বৈত ও দলীয় আবৃত্তির পাশাপাশি নৃত্য পরিবেশনায় মেতে ওঠে ছোট-বড় সকলেই।
রক্তকরবীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুধু আয়োজন নয় এটি হয়ে ওঠে সংগঠনের সদস্যদের এক মিলনমেলা। ক্ষুদে আবৃত্তিকারদের উপস্থিতি এবং তাদের প্রাণচঞ্চল পরিবেশনা শিশুদের সাংস্কৃতিক চর্চায় যুক্ত হওয়ার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। অভিভাবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণও প্রমাণ করেছে সুস্থ সমাজ গঠনে সংস্কৃতির ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তিচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তারা বলেন “শুদ্ধ উচ্চারণ শুধু কণ্ঠসৌন্দর্য নয়, এটি ব্যক্তিত্বের পরিচয়। সঠিক উচ্চারণে ভাব প্রকাশ মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, আর এই চর্চাই গড়ে তোলে সুস্থ, সুষম ও সংস্কৃতিমনা সমাজ।”
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বীথি রানী রায় এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আবৃত্তি প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এরপর কেক কাটা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ¡সিত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ করে নতুন মাত্রা।
রংপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, বীরগঞ্জ, পঞ্চগড়সহ পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে আগত আবৃত্তিকার, সংগীতশিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আয়োজনকে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর নাট্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল রহমান রেজু, জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ড. আশিকা আকবর তৃষা, দৈনিক প্রথম আলোর দিনাজপুর প্রতিনিধি রাজিউল ইসলাম রাজু, শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যজন তারিকুজ্জামান তারেক, এবং রক্ত করবীর উপদেষ্টা সমেশ চন্দ্র মজুমদার।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ‘ধনধান্য পুষ্পে ভরা’ গানের মনোমুগ্ধকর নৃত্যানুষ্ঠান দর্শকদের মুগ্ধ করে। অতিথি ও দর্শকদের আবেগময় অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে সভাপতি সুবর্ণা মুখার্জি ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি। তিনি আশা প্রকাশ করেন “শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তিচর্চার মাধ্যমে রক্তকরবী সুস্থ, সচেতন ও সংস্কৃতিমনা সমাজ গঠনে আরও এগিয়ে যাবে।”

















