উত্তর-পশ্চিম রিজিয়ন ব্যবস্থাপনায় রংপুর রিজিয়নের সীমান্ত এলাকায় পরিচালিত একাধিক অভিযানে নভেম্বর মাসে প্রায় ৪ কোটি টাকার অধিক মাদক ও চোরাচালানকৃত মালপত্র অস্ত্র জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় দিনাজপুর সেক্টরের সদর দপ্তরের অডিটরিয়াম হলে ফুলবাড়ী ব্যাটালিয়ন (২৯ বিজিবি) আয়োজিত প্রেসব্রিফিংয়ে দিনাজপুর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সাল হাসান খান এ তথ্য জানান।
এসময় ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার, জিটু অপারেশন অফিসার মেজর তানিম হাসান খান উপস্থিত ছিলেন।
সেক্টর কমান্ডার জানান, বিভিন্ন অভিযানে ৯৬৬ বোতল ফেনসিডিল, ১০০০ বোতল বিদেশি মদ, ৩৪৬৯ পিস ইয়াবা ও ২২৮ কেজি গাঁজাসহ বিপুল পরিমাণ নেশাজাতীয় ওষুধ ও ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে ৪৮ জনকে আটক করা হয়েছে। মানবপাচার প্রতিরোধে নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযানে একজন ভারতীয় নাগরিকসহ ৫জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ২ শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রমে ৩টি ওয়ান শুটারগান ৬ রাউন্ড গুলি ও ২ দশমিক ৩০ কেজি গান পাউডার জব্দ করা হয়। চোরাচালান দমনে ভারতীয় প্রসাধনী, ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী, শাড়ি, কম্বল, জিরা, চিনি, পেঁয়াজসহ বিপুল পরিমাণ পণ্য ২৫টি মোটরসাইকেল, ইজি বাইক, নৌকা ও বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।একই সময়ে ১২৫ গরু, ১৩টি মহিষ, ২টি ছাগল আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, রিজিয়নের সীমান্ত এলাকায় নতুন ৬টি ক্যাম্প স্থাপন এবং লালমনিরহাটে চতুরবাড়ী বিওপি উদ্বোধন হয়েছে, যা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নভেম্বর মাসে বিজিবি-বিএসএফের বিভিন্ন পর্যায়ে ৪১৩টি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার বলেন,নিয়মিত টহল, গোয়েন্দা তৎপরতা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার ফলেই সীমান্ত এলাকায় অপরাধ কমে এসেছে। নতুন বিওপি স্থাপনের ফলে নজরদারিও আরও শক্তিশালী হয়েছে।
বিজিবি জানায়, সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান দমন, মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আগামী দিনগুলোতেও অভিযান জোরদার করা হবে। নভেম্বরে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে ৪১৩টি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া বিরল সীমান্ত এলাকায় ৩০০টি শীতবস্ত্র, শিশুদের জন্য ১০০টি পোশাক বিতরণ এবং মেডিক্যাল ক্যাম্পের মাধ্যমে ৫০০ জনকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।
রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন চারটি সেক্টর ও ১৫টি ব্যাটালিয়নের সমন্বিত কার্যক্রমে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ ও মানবপাচার রোধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। মোট ১,৬৬৮,৮৫৪ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সদস্যরা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।


















