মোঃ মজিবর রহমান শেখ,,
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার ভূল্লীর শবদলে অন্যের দখলে থাকা বাংলাদেশ পুলিশের উদ্ধারকৃত ১ একর জমিতে যেন ভুল্লী থানা স্থাপন করা হয় এমন আবদার নিয়ে ওসির পেছন পেছন ঘুরছে স্থানীয় মানুষ জন । জানা যায়, গত শনিবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উদ্ধার হওয়া জমির সীমানা নির্ধারণ করে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম।
এখন বর্তমানে তারের বেড়া দিয়ে সীমানা ঘেরাওয়ের কার্যক্রম চলছে। সেখানে কাজ দেখতে গেলেই স্থানীয়রা ওসির পেছন পেছন ঘুরছে এবং ভুল্লী থানা যেন এখানেই করা হয় সেই আবদার করছে। জমি উদ্ধারের পর থেকেই স্থানীয় গ্রামের মানুষের কৌতুহল আর আবদার আরও নাড়া দিয়ে উঠেছে। আনন্দ উল্লাসী মানুষ জায়গাটার নাম দিয়েছে থানা চত্ত্বর। এখন থানা চত্বর বললে এক নামে চিনে স্থানীয়রা।
স্থানীয় খতিবর রহমান বলেন, আমাদের এখানে থানার জমি উদ্ধার হওয়ায় আমরা প্রত্যাশা করছি ভুল্লী থানা এখানেই করা হবে। আমরা স্থানীয়রা আগে অনিরপাদ ছিলাম। কিন্তু পুলিশ জমি উদ্ধারের পর আসা যাওয়া করাতে অনেক সাহস পাচ্ছি। তাই স্বপ্নর ভুল্লী থানা এখানেই নির্মাণ করা হবে এমন প্রত্যাশা করছি।
স্কুল ছাত্র দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, এখানে আগে তেমন মানুষ জন আসতোনা। এখন জমি উদ্ধার হওয়ার পর মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। এখানে একটি থানা হলে স্থানীয়রা আরও আনন্দিত হবে। এলাকাটিতে অনেক অপরাধ সংঘঠিত হয়। মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে গ্রামটি। আশা করি থানাটি এখানে হলে আর কোন অপরাধী মাথাচাড়া দিয়ে দাড়াতে পারবেনা এলাকায়।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে এলাকার জনগনের নিরাপত্তা ও জানমালের রক্ষায় পুলিশ ফাড়ি বসানোর উদ্দেশ্যে, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিচালক বরাবর তৎকালিক ঠাকুরগাঁও–১ আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী(ইদু) তার ব্যক্তিগত ১ একর জমি দান করেন। পরে কিছু সময় সেখান অস্থায়ী পুলিশ ফারি বসানো হলেও উঠিয়ে নেয়া হয়। এক সময় জমিটি স্থানীয় মানুষের দখলে চলে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন স্থানীয় এক জমির দালাল আজিজের দখলে ছিলো জমিটি। জমিতে তিনি বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করতেন । কিন্তু সম্প্রতি আরও কিছু কতিপয় ব্যক্তি স্থানীয় নূর ইসলাম (সদ্য সাবেক মেম্বার), রাজ্জাক, হাসেম আলী, জয়নাল,দুলু মিঞা সেই জমিটিতে ভবন সহ আর কিছু কার্যক্রম শুরু করে। তারা সকলে জাল দলিলের ব্যবস্থা করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু জমিটি পুলিশের মালিকানা থাকার বিষয়টি জানতো না ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ।
সম্প্রতি গোপন সূত্রে, বিষয়টি জানতে পারে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীরুল ইসলাম। এর পরেই তিনি জমিটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। খুঁজে বের করেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জমির দলিল।
ওসি তানভীরুল জানান, বিষয়টি জানতে পেরে আমি গোপনে তদন্ত শুরু করি। প্রয়োজনীয় সকল কাগজ বের করি। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সদর থানার পুলিশ সহ জমিটি উদ্ধার অভিযানে যাই। জমিটি এখন পুলিশের দখলে আছে। সেখানে বাংলাদেশ পুলিশের সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এখানকার মানুষের দাবি এখানে থানা স্থাপনা করা হোক। আমি সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানাতে পারি না । তবে এটুকু বলতে পারি এখানে পুলিশের কোন স্থাপনা করা হবে । ২০১৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এলাকাটি থানা করার ঘোষনা দিয়েছিলেন । ভুল্লি এলাকাটি শীঘ্রই ঠাকুরগাঁও জেলাধীন থানা ঘোষনা হতে পারে। উদ্ধারকৃত জায়গাটি যথাযোগ্য হলে সরকারের অনেক টাকা বেঁচে যাবে।