বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ আনিসুর রহমান আনিস ও গণঅধিকার পরিষদের দলীয় ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবু হানিফের মাঝে চলমান লাঞ্ছিতের ঘটনায় চলছে সমগ্র এলাকায় ব্যাপক কৌতুহুল, গুঞ্জন। উপজেলার প্রতিটি হোটেল-মোটেল, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে জনতার মাঝে ঘটনাটি টপ অব কান্ট্রি হিসেবে চেয়ারম্যান -মেম্বারের বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা বিরাজ করছে। ইউপি চেয়ারম্যান আনিস এবং মেম্বার আবু হানিফের মাঝে বেশ কিছুদিন থেকেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। উক্ত বিষয়ে শনিবার (১৯ আগষ্ট -২০২৩) সকালে পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান সকল সদস্য-সদস্যাদের নিয়ে বৈঠকে মিলিত ও তদন্ত চলাকালে চেয়ারম্যান, তার সমর্থকগন, পরিষদের অন্যান্য ইউপি সদস্য/নারী সদস্য সহ স্থানীয় সাধারণ জনতার অভিযোগ থেকে জানা গেছে , ইউপি সদস্য আবু হানিফ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, সীমাহীন দূর্নীতি, চরম স্বেচ্ছাচারিতা, একে অপরের প্রতি উস্কিয়ে দিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় মামলা লাগিয়ে দিয়ে হয়রানী এবং উভয় পক্ষের সহজ সরল নারী পুরুষের কাছে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়াসহ সে সময় মর্জিনা নামীয় জনৈক মহিলা মেম্বার হানিফ সহ আরও দুই জনের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ করেছে। অভিযোগকারী মহেশ চন্দ্র রায় জানান,ইউপি আবু হানিফ ভালো মানুষের আড়ালে কখনো মেম্বার, কখনো মানবাধিকার কর্মী, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো পুলিশের নাম ভাঙ্গিয় অর্থ বানিজ্যে নিতান্তই পটু।
সরকারি বিভিন্ন ভাতাভোগীকে কার্ড দেওয়ার,নাম করে টাকা হাওলাত নিয়ে পরিশোধ না করে উল্টো পাওনাদার কে হুমকি ধামকি গনঅধিকার পরিষদের নেতাএবং ইউপি সদস্য হওয়ায় বিভিন্ন সংস্থার অন্যতম সদস্য পরিচয় দানকারী আবু হানিফ নিজেকে মস্ত প্রভাবশালী হিসেবে এলাকায় চুটিয়ে দূর্নীতি চালিয়ে আসছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ তার সাথে না পেরে অনেকে ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত এবং চেয়ারম্যানের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা জানান, মেম্বার হানিফের উগ্রতা কেউ থামতে পারে নি। বারংবার মারমুখি হয়ে চেয়ারম্যানের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায়।
তাদের উভয়ের মাঝে ধস্তাধস্তি হয়, হট্টগোল হয়, বৈঠকের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়, পন্ড হয় বৈঠকের উদ্দেশ্য। হানিফের উশৃংখল এবং অসৌজন্যমূলক আচরণে সকলে হতবাক, বিস্মিত হয় বলে তারা সকলে উল্লেখ করেন।সকলে মনে করেন একমাত্র হানিফের কারনে গোটা ইউনিয়ন পরিষদের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, তার হীন মন মানসিকতা ও দূর্নীতির কারনে এলাকায় সকলের মুখ দেখানো কষ্টকর হয়ে গেছে। উভয়ে এর সমস্যা সমাধানে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) মোঃ ফজলে এলাহী গতকাল প্রায় দিনব্যপী ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগকারী ইউপি সদস্য হানিফ এবং অভিযুক্ত আনিস সহ সকল সদস্যদের অত্যন্ত বুদ্ধিমত্যার সাথে একক জিজ্ঞাসাবাদ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিসহ উপস্থিত সাংবাদিকদের মন্তব্য নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করেন। তদন্ত চলাকালে নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে অসংখ্য নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত শেষে ওই এলাকার ভুক্তভোগী ১০/১৫ জন ব্যক্তি হানিফের বিরুদ্ধে ইউএনও এর কাছে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন। তদন্ত কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রাজ্জাকসহ এক প্লাটুন পুলিশ, সাংবাদিক ও গন্যমান্য ব্যক্তিগণ। এব্যাপারে নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস জনগণের উদ্দেশ্য বলেন,ইউপি সদস্য আবু হানিফ অসৎ উদ্দেশ্যে ও পুর্বপরিকল্পিত গোপনে আভ্যন্তরিন মিটিং ভিডিও করে, মানুষের দ্বারা প্রকাশ করিয়ে মানহানি ঘটিয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ করা সহ স্বীয় শপথ ভঙ্গ করেছেন, আইন পরিপন্থী, চরম বেআইনি কর্মকান্ড করেছেন।
ইউপি সদস্য আবু হানিফ বলেন,আমি অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে আগে থেকেই প্রতিবাদ করে আছি। পরিশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ, আগত জনতার উদ্দেশ্য বলেন,আপনার কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।