বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :পোশাক ব্যাগ ও খাতা পেন্সিল পেয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ¡াস দেখা গেছে। অভিভাবকরাও আনন্দিত যে তাদের ছেলে মেয়েরা শুভসংঘ স্কুলে পড়তে এসে পোশাক ব্যাগ ও খাতা সবকিছু ফ্রি পাচ্ছে।
শিক্ষার মান উন্নয়নে সারা দেশে ব্যাপক হারে কাজ করে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রæপ। তারই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরে বীরগঞ্জ পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ড মাকড়াই গ্রামে অসহায়, মেধাবী ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে গত বছর শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত অসহায় দিনমজুর, হত দরিদ্র ও ক্ষুদ্র নৃ -গোষ্ঠীর পরিবারের ছেলে মেয়েরা নিয়মিত পড়াশোনা করছে। সেই সাথে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহন করছে বসুন্ধরা গ্রæপ ।
মঙ্গলবার সকালে শুভসংঘ স্কুল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে বিনামূল্যে নতুন স্কুল ড্রেস, জুতা, ব্যাগ, পেনসিল, রাবার,কাটার, পেন্সিল বক্স সহ অন্যান্য উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। এসব শিক্ষা উপকরণ পেয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থী মনের আনন্দে মেতে ওঠে।
শিক্ষা উপকরণ হাতে পেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুরেজা আক্তার বলেন, শুভসংঘ স্কুলে ভর্তি পর আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি আজ নতুন স্কুল ড্রেস, জুতা, ব্যাগ , খাতা, কলম পেন্সিল সহ সবকিছু ফ্রিতে পাইছি এখন মনের আনন্দে নির্ভয়ে বিদ্যালয়ে আসবো পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে চাই আর আমার পাশে বসুন্ধরা গ্রæপ এ ভাবে পাশে দাঁড়াবে কখনো ভাবতেও পারিনি।
প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেরিন আক্তার বলেন, আমার বাবা ভ্যান চালান মা মাইসের বাড়িত কাজ করে, আগে অন্য স্কুলে পড়তাম তখন পড়াশোনার জন্য খাতা, কলম ,ব্যাগ আব্বার কাছে চাইতাম অভাবের জন্য কিনে দিতে পারতো না। তাই তখন স্কুলে যেতাম না। এখন এই স্কুলে ভর্তির পর পড়াশোনা নিয়ে কোন কিছু চিন্তা করতে হয় না । তাই এখন আমি মনের আনন্দে স্কুলে আসছি ,পড়াশোনা করছি।
এ বিষয়ে স্কুলের অভিভাবক আব্দুস সালাম বলেন, আমি হোটেলে কাজ করি দৈনিক যা আয় হয় তা দিয়েই কোন রকমে চলে আমার সংসার কিন্তু আমার খুব ইচ্ছা ছিল সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়াশোনা করার কিন্তু পরিবারের অভাব অনটনে পারছিলাম না এর ফলে মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে আমার সাথে নিয়ে কাজ করাতাম তখন হঠাৎ একদিন জানতে পারি বসুন্ধরা গ্রæপ আমাদের গ্রামে স্কুল করছে সবকিছু ফ্রীতে পড়াবে তখন সেখানে মেয়েকে নিয়ে ভর্তি করে দিই। তখন হতে মেয়ের পড়াশোনার জন্য আমাকে আর চিন্তা করতে হয় না। এজন্য বসুন্ধরার কাছে আমি ঋণী। কারণ তারা না হলে আমার সন্তানের পড়ালেখা বন্ধই হয়ে যেত।
শিক্ষা উপকরণ বিতরণে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কালের কন্ঠ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি এমদাদ হক, স্কুলের সমন্বয়ক ও কালের কণ্ঠ পত্রিকার বীরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি সোহেল আহমেদ, বসুন্ধরা শুভসংঘের উপজেলা শাখার সভাপতি ও শিক্ষক ফরহাদ হোসেন ও জেসমিন বেগম, স্থানীয় অভিভাবক সহ উপজেলা শাখা শুভসংঘের বন্ধুরা।