তরমুজের বাগানে ছোট-বড় মাঁচায় মাঁচায় বাতাসে ঝুলছে কৃষকের স্বপ্ন। এ অঞ্চলে প্রথমবারেই ভাল ফলনের সফলতা। বাজারে ভালো চাহিদা, দাম থাকায় এবং রং, স্বাদ, আকর্ষণীয় ও লাভজনক হওয়ায় এ জাতের তরমুজ দেখতে ক্ষেতে ভিড় করছেন অনেকে।
গ্রীষ্মকালীন মওসুমে আকর্ষনীয় এ দুটিজাতের তরমুজ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়া যায়। যে কেউ তরমুজ চাষে স্থানীয়ভাবে নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে। তরমুজ চাষে ফলন দেখে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেক কৃষক।
গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে সরে এসে মাচায় তরমুজ চাষে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউপির রাজারামপুর গ্রামের স্বপ্নবাজ চাষি মোঃ আনছার আলী। আর এ অঞ্চলে প্রথমবারেই বাজিমাত। এখন তাঁর মাচায় মাচায় ঝুলছে রঙ্গিলা ও মার্সেল জাতের তরমুজ। কৃষিবিভাগের সহযোগিতায় গত মার্চ মাসের শেষে ২০ শতক জমিতে দুটি জাতের তরমুজ বীজ বপন করেন। হলুদ রঙের রঙ্গিলা এবং কালো রঙের মার্সেল জাতের তরমুজ এখন ঝুলছে মাচায় মাচায়। দেখতে যেমন দৃস্টিনন্দন এর স্বাদ-মিষ্টি অন্যান্য তরমুজের চেয়ে বেশী বললেন চাষী আনছার আলী।
তরমুজ চাষী মোঃ আনছার আলী জানান, রঙ্গিলা ও মার্সেল জাতের তরমুজ গত মার্চ মাসের শেষে চাষ শুরু করি। এখন পরিপক্ষ হয়েছে। আগামী ৮/১০দিন পর বাজারে বিক্রি করবো। এ জাতের তরমুজ অন্য জাতের চেয়ে মিষ্টি বেশী। প্রথম অবস্থায় আমার ২০ শতক জমিতে চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ২০হাজার টাকা। তবে তরমুজ লক্ষাধিক টাকার উপরে বিক্রি করতে পারবো আশা করি। তরমুজ চাষের প্রথম ধাপে খরচ একটু বেশি হয়। তরমুজগুলো সাধারনত ২ থেকে সাড়ে ৩ কেজি ওজনের হয়। রঙ্গিলা ও মার্সেল জাতের তরমুজ শীতকাল ছাড়া বছরের সবসময় চাষ করা যায়। এর দামও ভালো পাওয়া যায়। মাচা পদ্ধতিতে চাষ করায় উৎপাদন হারও বেশি। মালচিং পেপার বেডে সেটিং ও নেটিংয়ের ফলে বৃষ্টি, পোকা-মাকড় ও ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মাচা ও মালচিং পেপার তিনবার ব্যবহারের উপযোগী হওয়ায় ২য় ও ৩য় ধাপে তরমুজের উৎপাদন খরচও খুব কম হয়। কীটনাশক ছাড়া বিষমুক্ত, কেঁচো সার, কম্পোস্ট, বায়োনিম, ফেরোম্যান ট্যাপ ব্যবহারের ফলে রোগের প্রকোপ কম হয়।
বিরল কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবজালুর রহমান জানান, মাচায় তরমুজের ফলন প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়। তরমুজ দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। মাচায় তরমুজ চাষ দেখে এলাকার অনেক চাষি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।লাভজনক হওয়ায় ভবিষ্যতে অনেক কৃষকই তরমুজ চাষে এগিয়ে আসবে।
বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম জানান, বিরল উপজেলায় প্রথমবারের মতো এই দুটি রঙ্গিলা ও মার্সেল জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। এটি গ্রীষ্মকালীন মওসুমে সুস্বাসাদু ও মিষ্টি জাতের এই তরমুজ চাষ হচ্ছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ এই চাষে উদ্বুদ্ধসহ সবরকম সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে।