বৃহস্পতিবার , ১১ জুলাই ২০২৪ | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীরগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে সাব-রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য থাকায় বিপাকে জমি ক্রেতা ও গ্রহিতা ,রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
জুলাই ১১, ২০২৪ ৮:০০ অপরাহ্ণ

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)থেকে বিকাশ ঘোষ :

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে। এতে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সম্প্রতি গত ১৩ নভেম্বর ২০-২৩ তারিখে বীরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে রিপন চন্দ্র মন্ডল যোগদান করার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতারা দিনাজপুর-১(বীরগঞ্জ -কাহারোল) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো। জাকারিয়া জাকাকে অবহিত করেন। মাননীয় সাব-রেজিস্টার রিপন চন্দ্র মন্ডলকে বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ডেকে এনে সাবধান করে দেওয়ার পরেও তিনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে জমি সম্পাদন করে করে আসছিল।

গত ২৯-০৫-২০২৪ ইং তারিখে ঠাকুরগাঁও জেলার উত্তর গড়েয়া এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে মো: মিজানুর রহমান ১০৬ জরুরি হেল্প নাম্বারে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দিনাজপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সহকারী পরিচালক মো: ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে উপ- সহকারী পরিচালক মো: কামরুন নাহার সরকার, সহকারী পরিদর্শক মো: মিজানুর রহমান ও উচ্চমান সহকারী মোঃ শাহজাহান আলী সমন্বয়ে একটি তদন্ত দল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এলে ও তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নকল নবিশ সুমন, রশিদসহ আরো কয়েকজন প্রয়োজনীয়

কাগজপত্র ও তথ্য-প্রমাণ নিয়ে ঘুষখোর অফিসারের খাস কামরায় তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপন করে। ফলে দুদকের তদন্ত টিম ওই রুমের তালা ভেঙে প্রবেশ করে ঘুষ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসা করেন দুদক টিম। প্রাথমিক তদন্তে সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মন্ডলের বিরুদ্ধে আনিত ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ সত্য মর্মে স্বীকার করে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সহকারী পরিচালক মো: ইসমাইল হোসেন বলেন, ভুয়া দলিল করতে মাঠ পর্চা ও নামজারী থাকার পরেও বাটোয়ারা দলিলের অজুহাতে ৭ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করার তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে আরো অনেকে মৌখিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত শেষে দুদক টিম স্থান ত্যাগ করতে চাইলে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা রিপন চন্দ্র মণ্ডলের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। বীরগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে সীমাহীন ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগকারী মিজানুর রহমান জানান, আমি সীমাহীন হয়রানির শিকার হয়ে দুদকে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।

অভিযুক্ত বীরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার রিপন এর তার খাস কামরায় স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার পাস ওয়ার্ড তিনি জানেন না সাফ জানান তদন্ত টিম ও মিডিয়ার সামনে এবং কে এটি পরিচালনা করেন তাও তিনি বলতে পারেননি, দায়িত্বে চরম অবহেলা ও উদাসীন বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেলা রেজিস্ট্রার মো: হেলাল উদ্দিন। এ ব্যাপারে গত ১ জুন দেশের বিভিন্ন জাতীয় এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে গংগাচড়া উপজেলায় বদলি হয় সাব- রেজিস্ট্রার রিপন মণ্ডল। বর্তমানে দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও নতুন করে কোন সাব- রেজিস্ট্রার যোগদান না করার কারণে জমি ক্রেতা-বিক্রতা বিপাকে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার। অন্যদিকে দীর্ঘদিন যাব সাব -রেজিস্ট্রার না থাকায় মানবতার জীবন যাপন করছেন দলিল লেখক ও অফিস সহকারীরা। দলিল লেখক আনোয়ার হোসেন জানান,প্রতিদিন সাব রেজিষ্টি অফিসে এসে ঘুরে যেতে বাধ্য হচ্ছি। এতে পরিবার -পরিজনের খরচ যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছি ।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও