সোমবার , ৫ মে ২০২৫ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্ভোগে দু’উপজেলার মানুষ … বীরগঞ্জে নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেতুর খুঁটি, অবশিষ্ট কাজে অচলাবস্থা

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
মে ৫, ২০২৫ ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার
আত্রাই নদীর ওপর খুঁটি নির্মাণের পর ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুর বাকি নির্মাণ কাজে শেষ করতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। অর্থাভাবে সেতু নির্মাণ নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে করে বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষের উপজেলা সদর ও বীরগঞ্জ পৌর এলাকায় যাতায়াতে দুর্ভোগ দূর হচ্ছে না। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মাসে। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২০২১ সালের ২ এপ্রিল। আর কাজ ফেলে ৯ মাস ধরে ঠিকাদার লাপাত্তা। স্থানীয় লোকজন দীর্ঘদিন ধরে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। উপজেলার পাল্টাপুর ইউপির সংযোগ সড়কের আত্রাই নদীতে জৈন্তীয়া সেতুর নির্মাণ কাজ ৫ বছরেও শেষ করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। সেতু না থাকায় স্থানীয়দের এখন ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পারাপার হতে হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব অবহেলার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্য পাল্টাপুর ইউনিয়নের মধুবনপুর এলাকায় নদীর উপর ৪৫০ মিটার দৈঘেত্রে একটি সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। যদিও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে আড়াই বছর আগে।
এক বছর কাজ বন্ধ থাকার পর দুই সপ্তাহ আগে আবার কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় মানুষদের ভোগান্তি আর শেষ হচ্ছে না। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সেতুর কাজ শেষ হচ্ছে না। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বলছেন, একদিকে করোনা পরিস্থিতি, অন্যদিকে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় কাজ শেষ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেতুর প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় বীরগঞ্জ উপজেলায় আত্রাই নদী ৪৫০ মিটার সেতুটির নির্মাণকাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুরমা এন্টারপ্রাইজ কাজটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। যার ব্যয় ধরা হয় ৪৪ কোটি ১৬ লাখ ৪২ হাজার ২৬৩ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ করার সময় ২০২১ সালের ২ এপ্রিল। তবে নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। দ্বিতীয়বারের মতো চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে মেয়াদ বাড়িয়ে দেন এলজিইডি।
গত শনিবার বিকেলে সেতু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেতুর সব পিলার স্থাপন হয়েছে। সেতুর পাঁচটি অংশের ৩টির ঢালাই হয়েছে। চলছে তৃতীয় গার্ডারের রড বাঁধাইয়ের কাজ।

এদিকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মোটরসাইকেলসহ মানুষ নদী পার হন। নদী পারাপার হওয়া কয়েকজন জানান, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাইকেল, মোটরসাইকেল এই নৌকা দিয়েই পারাপার হয়। বর্তমানে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে মানুষ।
নদীর পূর্ব দিকে খানসামা উপজেলার মধুবনপুর, নেউলা, কাইয়ুমপুর, দুহশুহ, ভান্ডারদহ, খামারপাড়া ও জোয়াইরপাড়া গ্রাম। আর পশ্চিমে মধুবনপুর, বাছারগ্রাম, রাজিবপুর, ভোগডোমা, রঘুনাথপুর, ছয়গুটি, ধুনট ও সনকা গ্রাম। উভয় পারের গ্রামে ৫০ হাজারের বেশি লোকের বসবাস কথা প্রসঙ্গে নৌকার মাঝি মুরুন্নবী জানান, সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মানুষ ও যানবাহন নৌকায় পারাপার করেন। প্রতিদিন ৪৫-৫০টিপ হয়। ঘাট ইজারা নিয়েছেন ২৭ লাখ টাকায়। অনেক সময় যাত্রীদের আধা ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রী বেশি না হলে নৌকা ছেড়ে লাভ হয় না। নদী পার হয়ে বীরগঞ্জ উপজেলার ঘাটে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক মহসিন আলী সঙ্গে। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণ বন্ধ রেখে বিপাকে ফেলা হয়েছে এলাকাবাসীকে। নৌকায় করে সবজি আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে। সেখানে অর্ধেক সেতু তৈরি করে ফেলে রাখার কারণে নৌকায় মালপত্র আনা-নেওয়া করতে অসুবিধা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন সরু সাঁকো তৈরি করেছে। তাতে শুধু হেঁটে পারাপার হওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, সেতুটি হলে বীরগঞ্জ যেতে রাস্তা পড়বে ৭ কিলোমিটার। ১২ কিলোমিটার রাস্তা অতিরিক্ত ঘুরতে হয় তাঁদের। পাল্টাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তহিদুল ইসলাম জানান,দুই উপজেলার একমাত্র অবলম্বন এই ব্রিজের কাজ দীর্ঘদিন থেকে চলছে। কিন্তু এর শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছে না। দ্রুত ভিত্তিতে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করার এলাকাবাসীর দাবি। পাল্টাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য জামাল বলেন, খানসামা থেকে এক বস্তা ধান বা আলু আনতে ভ্যান ভাড়া দিতে হয় ৫০টাকা। সেতু চালু হলে ২৫ টাকা ভাড়ায় বীরগঞ্জ আসবে। খানসামা ধান ও সবজি চাষে প্রসিদ্ধ উপজেলা। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে সবচেয়ে বেশি উপকার হবে ওই এলাকার কৃষকদের। সেতু নির্মাণে ধীরগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মাসুম আলী বলেন, ‘৪টি স্প্যানের কাজ শেষে হয়েছে। ৫ নম্বর স্প্যানের কাজ চলছে। করোনা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সবকিছু মিলিয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছি। নতুন বছরের আগস্টে ব্রিজ হ্যান্ডওভার করব। দিনাজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সেতুটির ৫৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। দুইবার সময়ও বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

তেঁতুলিয়ায় জাতীয় যুব দিবস পালিত

পীরগঞ্জে এতিমখানায় শুকনা খাবার বিতরণ

বোদায় আনসার ভিডিপির উপজেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

খানসামার আত্রাই ও বীরগঞ্জের ঢেপা নদীতে ভেসে আসা ৭ জনের লাশ উদ্ধার\ পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর

অগ্নিদগ্ধ শিশু সন্তান সাজ্জাদ হোসেনকে বাচাতে সাহায্যের আবেদন

আর্ন্তজাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা মনে রাখতে হবে প্রবীণরা সমাজের বোঝা নয়-সম্পদ

ঠাকুরগাঁওয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মানববন্ধন

পীরগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের সময় এক ব্যাক্তি আটক

ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীতে রাতের আঁধারে কীটনাশ ছিটিয়ে কৃষকের ৩ বিঘা জমির আমন ধানের চারা নষ্ট করে দিয়েছে !

ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন লালের ইন্তেকাল