ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি\বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় শাস্তি পাচ্ছেন ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির আরও চার নেতা। এর মধ্যে দুজনকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি এবং দুজনকে শোকজ করে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত ১২ জুলাই ভোটের মাধ্যমে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফলাফল ঘোষণা দেরি হওয়ায় ভোট কেন্দ্রে বিএনপির মহাসচিবের ভাই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।
এর আগে কাউন্সিলে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন বলে ঘোষণা দেন মির্জা ফয়সল। তবে পরবর্তীতে হামলার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ আলম এবং সাধারণ টিএম মাহবুবুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে দুই নেতার বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেয় উপজেলা বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে শাস্তির মুখে পড়েছে আরও চারজন নেতা। এর মধ্যে দুজনকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি এবং দুজনকে শোকজ করে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
গত শুক্রবার (১ আগস্ট) ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আহŸায়ক মাসুদুল ইসলাম মুন্না ও সদস্য সচিব কামরুজ্জামান কামুর স্বাক্ষরিত পত্রে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জুলফিকার আলী শাহ ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ চৌধুরীকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন কার্য দিবসের মধ্যে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।
একই দিনে ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ইমরান মাহমুদের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রদলে যুগ্ম আহŸায়ক ইলিয়াস আলী ও সাদ্দাম হোসেনকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।
আর সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন। এরপর থেকে গত ৩০ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশ, পরের দিন ৩১ জুলাই মানববন্ধন ও সবশেষ ০২ আগস্ট অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ভোটের মাধ্যমে বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদে ফলাফল নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে বিএনপির মহাসচিবের ভাই জেলার সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন এসে ফলাফল ঘোষণা করেন। ফেরার সময় কে বা কারা তার ওপর হামলা ও তাকে বহনকারী গাড়িতে ভাঙচুর করে।
পরে গত ১৩ জুলাই বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী সংবাদ সম্মেলন করে কাউন্সিলের ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে জেলা বিএনপির সভায় দুই নেতাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠায়।