নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে বাঁশের খাটিয়া দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ স্বামী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর স্বামী শহিদুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউপির হেয়াতপুর গ্রামের (চিনিরচড়া) পশ্চিমপাড়া এলাকার মো. শহিদুল ইসলামের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আটক স্বামী শহিদুল ইসলাম(৩৭) নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউপির হেয়াতপুর (চিনিরচড়া) গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা নবাবগঞ্জের মাহমুদপুর ইউপির আজমপুর গ্রামের মৃত আঃ মজিদের স্ত্রী গোলাপী বেগম বাদী হয়ে গুরুতর জখম ও খুন করার অভিযোগ এনে রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেছে।
নিহতরা হলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউপির হেয়াতপুর (চিনিরচড়া) গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার মো. শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ও তার ছোট মেয়ে আফরিন জান্নাত (৬)। এছাড়া এ ঘটনায় তাদের বড় ছেলে আল আমিন (১৩) রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতলে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রবিবার প্রেস ব্রিফিং করেন দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।
মামলার বিবরনে জানা যায়, নবাবগঞ্জের হেয়াতপুর চিনিরচড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম একজন কাঠকাটা শ্রমিক। সে নিয়মিত সকালে কাজ করতে যায় আর সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরে। প্রতিদিনের মত গত শনিবার সে কাজ করতে যায় এবং সূর্যাস্তের পূর্বে বাড়ী ফিরে আসে। এরপর সে বাইসাইকেল মেরামত করতে দাউদপুর বাজারে যায়। দাউদপুর বাজারে যাওয়ার সময় মোবাইলে গান শোনা নিয়ে বিরক্ত হয়ে সন্তাদের শাসন করা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পাশে থাকা বাঁশের মোটা খাটিয়া দিয়ে তিনি স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে আঘাত করেন। পরে সন্তানরা এলে তাদেরকেও আঘাত করেন। এরপর সে চলে যায়। বাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ীতে ফিরে স্ত্রী মরজিনা বেগম(৩২) পুত্র আল আমিন(১৩) ও মেয়ে আফরিন জান্নাত (৬)কে বাড়ীর আঙ্গনায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা অবস্থায় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছেলে আল আমিন ও মেয়ে আফরিন জান্নাতকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।সেখানে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অপরদিকে শহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী মরজিনা বেগমকে রিক্সাভ্যানযোগে দাউদপুর বাজারে জনৈক ডা. আজিজের নিকট নিয়ে গেলে তিনি তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এরপর শহিদুল তার স্ত্রী মরজিনা বেগমের লাশ নিজ গ্রামের পিতা সোহরাব আলীর বাড়ীতে নেয়। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে মরজিনা বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুজ্জামান জানান, ওই মামলায় মরজিনা বেগমের স্বামী গৃহকর্তা শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, সন্তাদের শাসন করা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি বাঁশের খাটিয়া দিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আঘাত করেন। এতে দুইজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা মামলা দায়ের কর্।ে রবিবার আসামিকে দিনাজপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।