মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,
সম্প্রতি বহুল আলোচিত নাম খন্দকার মোঃ আলাউদ্দীন আল আজাদ। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে তিনি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, একের পর এক করে গেছেন অনিয়ম দূর্নীতি। আর এ কারণে নাকি তার পদাবনতি হয়েছে। আগে ছিলেন শিক্ষা অফিসার; এখন পদাবনতি করে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বদলি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ দেননি। মাউশি’র আদেশ থেকে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন আল আজাদের বদলীর আদেশ হয় চলতি বছরের গত ২৩ আগষ্ট এবং ২৯ আগষ্টের মধ্যে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার নিপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার কথা কিন্তু প্রায় এ মাস গত হয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি তিনি।
নিপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বলেন তিনি এখনও যোগদান করেননি। তিনি তো জেলা শিক্ষা অফিসার ছিলেন, হয়তো অন্য কথাও যাওয়ার চিন্তা করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করে অন্য কোথাও বদলী নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একাধিক প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐ শিক্ষা অফিসার এতোই ঘুষখোর ছিলো যে, তিনি টাকা ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। তিনি ঘুষের টাকা চাইতে গিয়ে অনেকের কাছে অপমানিতও হয়েছেন। কেউ শার্টের কলার ধরেছেন, কেউ আবার কিল ঘুষি মেরেছেন। কেউ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক বলেন, আমার বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য ১ লাখ টাকা দাবী করে। এনিয়ে তার সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়। পরে এক পর্যায় তার শার্টের কলার ধরতে বাধ্য হই। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আরেক প্রধান শিক্ষক বলেন ঐ শিক্ষা অফিসার আমার কাছে ১ লাখ টাকা দাবী করলে আমি তার উপর চেয়ার উঠাতে বাধ্য হই। এমন চিত্র শুধু ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় নয়, ঠাকুরগাঁও জেলার অন্য উপজেলা গুলোতে একই অবস্থা। পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, হরিপুর ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার একাধিক উচচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, আলাউদ্দীন আল আজাদ এতোই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ছিলেন যে, তার কারনে অনেক শিক্ষক নি:স্ব হয়ে পড়েছেন। তিনি ঠাকুরগাঁও থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বেশীর ভাগ সময় দিনের বেলায় অফিস না করে রাতের বেলায় এবং বন্ধের দিন অফিস করতেন। আর সবকিছু লেনদেন হতো রাতের বেলায়। এ ব্যাপারে দেবীগঞ্জ এন এন সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক (সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার) আলাউদ্দীন আল আজাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক সফিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন আমি নতুন যোগদান করেছি। আমার তেমন জানা নেই। তবে তিনি নতুন কর্মস্থলে এখনো যোগদান করেননি।