সাড়ে ৩ শত বছর ধরে চলে আসা সনাতন ধর্মালম্বীদের উৎসব ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনাজপুরে গোষ্ট পুজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ও রাধার আরাধনায় এ গোষ্ট পুজা ও মেলা। মেলায় সার্বক্ষনিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ নিরাপত্তা কর্মীরা ছিলেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও দিনাজপুর শহরের আনন্দসাগর শিবমন্দির প্রাঙ্গনে দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মালম্বীদের পুরোনো গোষ্ট পূজা ও এ মেলায় হাজার হাজার দর্শনার্থী ও পূণ্যার্থীদের উপচেপড়া ভীড়।গোষ্ট মেলায় নাগরদোলা, খাদ্যপন্য-খেলনাসহ হরেক রকমের পন্যের দোকান ছাড়াও কাচাঁ সবজী, মাছেরও দোকান রয়েছে।
শনিবার সকালে দিনাজপুর রাজবাটীস্থ কালিয়াজিউ মন্দির থেকে রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি নগ্ন পদব্রজে আনন্দসাগর এলাকায় শ্রী শ্রী গোষ্টধাম শিব মন্দিরের পার্শ্বে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আলাদা করে রাধা কৃষ্ণ রেখে বাদ্য বাজনা নিয়ে পূজা ও ভক্তদেরকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পূজা উপলক্ষ্যে বসে দিনব্যাপী এই মেলা।
পূজা ও মেলা দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতন ধর্মপ্রাণ হাজার হাজার দর্শনার্থী ও পূণ্যার্থীরা আসেন এখানে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে, বিশেষ এ দিনটিতে সকলের মঙ্গল কামনা করেছেন তারা।
নগ্ন পদব্রজে আনন্দসাগর এলাকায় শ্রী শ্রী গোষ্টধাম শিব মন্দিরে আসা যতিন চন্দ্র রায় জানান, প্রচলিত আছে, গোষ্ট অষ্টমীর দিনে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ কালিয়া নাগকে দমন করেছিল। এছাড়াও আশি^ন-কার্তিক মাসে অভাবের কারনে এ অঞ্চলের মানুষ বলে থাকেন গোষ্ঠ গেলে কষ্ঠ শেষ হয়ে যায়। কার্তিক মাসে নতুন ধান উঠে আর ঘরে ঘরে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। ভক্তরা সকালেই তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে আসেন। সারাদিন এখানে থেকে রান্না করে খায় এবং পুর্জা-অর্চনা করে সকলের মঙ্গল কামনা করেন।
পূজারীদের মতে, কালিপূজার পরের অষ্টমীকেই গোষ্ট অষ্টমী বলা হয়। এই দিনে মূর্তি নিয়ে আসা হয়, আবার পূজা শেষে রাজবাড়ীতে প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
আয়োজক কমিটির সদস্যদের মতে, মহারাজার চিরাচরিত প্রথা ও ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী এই উৎসব পালিত হয়।