বীরগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে বিকাশ ঘোষ: দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জে হতদরিদ্র বৃদ্ধ হযরত আলী (৬৫) দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত স্ব-রচিত মুক্তিযুদ্ধের গান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের গান ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭মার্চের ভাষণ দিয়ে লোকজনকে আনন্দ দিয়ে অর্জিত অর্থে সংসার চালাচ্ছেন। জীবিকার তাগিদে গান গেয়ে ও ভাষণ প্রদান করে মানুষের কাছে হাত পেতে চেয়ে নিয়ে আজও সংসার চালাতে হচ্ছে তাঁকে। বীরগঞ্জ উপজেলার ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত রজব আলীর পুত্র হযরত আলী (৬৫)। কিশোর বয়সে ১৯৭১ সালে গরুর রাখাল ছিলেন তিনি। হযরত আলী দীর্ঘদিন থেকেই গান ও ভাষণ পরিবেশ করে এক সময় নিজেই মুক্তিযুদ্ধের বর্ণা দেন। তার ভাষণ শুনে এই এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয় ওঠে। বিশেষ করে স্বাধীনতার যুদ্ধের উপর তার রচিত গান,পাক সেনাদের ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া,রাজাকারদের ভূমিকাসমৃহ স্থানীয় ভাষায় বর্ণনার মাধ্যমে বাস্তব ঘটনাকে তুলে ধরেছেন মানুষের মধ্যে। এক সময় বিভিন্ন হাট বাজারে এ ভাষণ পরিবেশন করে আসর জমিয়ে তুলতেন হযরত আলী। বীরগঞ্জ পৌরশহরসহ উপজেলার হাট বাজার ছাড়া ও আশেপাশে উপজেলার বড় বড় হাট বাজারগুলোতেও আসর জমাতেন তিনি। আসর শেষ হলেই উপস্থিত লোকজন আগ্রহ ভরে ১০ হতে ২০ টাকা করে তার হতে গুঁজে দেন। এতে প্রায় প্রতিদিন দুই থেকে চার’শ টাকা রোজগার করেন । অর্জিত অর্থ দিয়ে বর্তমানে ছাগল পালন করে স্বলম্বী হয়েছেন তিনি। হযরত আলীর হতের একটি ব্যাগ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু, স্থানীয় সংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপাল ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছবি শরীরে ধারণ ও অবলম্বন করে রোজ ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে রোজগার হয় মাত্র এক থেকে দেড়’শ টাকা। যা দিয়ে তার সংসারের চাকা ঘোরাতে গিয়ে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। এক সময় যার গান ও ভাষণ শুনে শতশত লোকজন জড়ো হতো। বর্তমানে চলাফেরাতেও সীমাবদ্ধতা এসেছে। আগের মতো আর চলতেও পারছে না হযরত আলী। জীবন সায়াহ্নে এসে জীবন যুদ্ধে হযরত আলী পরাজিত সৈনিক। তার ভাষণে মানুষ খু্জে পায় মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস। সমাজে অনেক বিত্তবান ব্যক্তি রয়েছেন। যারা শত শত হযরত আলীর ভরণ- পোষণের দায়িত্ব নিতে পারেন। হযরত আলী জানান, এই বয়সে এসে আমাকে কেউ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে না। মুক্তিযুদ্ধে গান ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ করেই কবরে যেতে চাই হযরত আলী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন অসহায় হযরত আলীর খোঁজ- খবর নিয়ে তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হোক।