দিনাজপুর প্রতিনিধি \
আজ ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস। আজকের এই দিনে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্বতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি বাস্তবায়নের প্রতিবাদে গড়ে উঠে ঐতিহাসিক গণআন্দোলন। এ গণআন্দোলনে গুলিতে প্রাণ হারায় তিন যুবক, আহত হয় তিনশ’র অধিক মানুষ। এরপর থেকে এ দিনটিকে ফুলবাড়ী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফুলবাড়ীবাসী।এদিকে ফুলবাড়ী গণআন্দোলনের ১৬বছর হলেও পূর্নবাস্তবায়ন হয়নি ফুলবাড়ীবাসীর সাথে সম্পাদিত ছয় দফা চুক্তি। উল্টো আন্দোলনকারী নেতাদের উপর চেপে বসেছে এশিয়া এনার্জির দায়ের করা একাধিক মামলা।এই কারনে আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দসহ এলাকাবাসীর মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
আজ ফুলবাড়ী দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসুচীর নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারন, শোক র্যালী, স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পন, আলোচনা সভা রয়েছে বলে জানান,তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার নেতৃবৃন্দ।
আজ শুক্রবারের বিভিন্ন কর্মসুচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদ থাকার কথা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু জানান, আইন করে উম্মুক্ত খনি বাস্তবায়ন বন্ধ করা ও ফুলবাড়ীর গণআন্দোলনের নেতাদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, ফুলবাড়ীবাসীর সাথে সম্পাদিত ছয়দফা চুক্তি পূর্ন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান।
উল্লেখ্য, আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দরা জানান, ২০০৬ সালের ২৬ আগষ্ট উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনি বাস্তবায়নের প্রস্তাবকারি এশিয়া এনার্জি নামে একটি বহুজাতিক কোম্পানীর ফুলবাড়ীস্থ অফিস ঘেরাও কর্মসুচি পালন করতে গেলে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মিছিলের উপর টিয়ারশেল ও গুলিবর্ষন করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত ছাত্র তরিকুল ইসলাম, নিরিহ যুবক আমিন ও সালেকিন নামে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। একই ঘটনায় আহত হয় আরো তিন শতাধিক মিছিলকারি। এদের মধ্যে বাবলু রায় নামে একজন চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এখনও সেই গুলির ক্ষত বহন করছে অনেকে। এরপর ফুলবাড়ীবাসীর টানা চারদিনের গণআন্দোলনের মূখে ৩০আগষ্ট, তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ী বাসির সঙ্গে ছয় দফা শর্তে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। যা ফুলবাড়ী ছয় দফা চুক্তি বলে পরিচিত। এরপর থেকে দিনটিকে ফুলবাড়ী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে অরাজনৈতিক সম্মিলিত পেশাজীবি সংগঠন এবং তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আজও আন্দোলন করে আসছে।