পঞ্চগড় প্রতিনিধি\দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে হু হু করে নামছে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। গত তিন দিন ধরে দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়। আর কয়েক দিনের মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা নামতে পারে সিঙ্গেল ডিজিটে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা নামার সাথে সাথে বাড়ছে শীত। আর শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাষকষ্ট আর ঠান্ডাজনীত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালমূখী হচ্ছেন অনেকেই। অবশ্য হাসপাতালে আসা রোগিদের অধিকাংশই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। খুব কম সংখ্যক রোগিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে এখন প্রতিদিনই ২শ থেকে ৩শ রোগি আসছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। উপজেলার অন্য হাসপাতালেও একই অবস্থা বলে জানা গেছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চলতি শীত মৌসূমে দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়। এর আগে বুধবার ১৩ দশমিক ৩ এবং মঙ্গলবার ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়ায়। যা দেশের মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। আর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও নিচে নামতে শুরু করেছে। গত বুধবার বিকেলে তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ আর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা নামতে শুরু করায় রাতের বেলা প্রচন্ড শীত অনুভ‚ত হচ্ছে। উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিক থেকে শীতল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও নামবে বলে তিনি জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহির্বিভাগে প্রচুর রোগি আসছেন। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্ক রোগিরাও আসছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। তবে অবস্থা ভাল থাকায় অধিকাংশ রোগিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর যাদের অবস্থা কিছুটা জটিল তাদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। এ কারণে ভাইরাসজনিত রোগে শিশুদের সাথে বয়স্ক মানুষরাও আক্রান্ত হচ্ছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডাজনিত সমস্যাও বাড়বে। আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। শিশুর দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। শিশুরা কোনো অবস্থায় যেন ভেজা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে ঠান্ডার সমস্যা থেকে তারা কিছুটা হলেও সুরক্ষা পাবে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, পঞ্চগড়ে ডায়রিয়া ও নিউমনিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুরা আউটডোরে আসছে। আউটডোরের রোগীরা চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই নিজ বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এর মধ্যে যারা বেশী অসুস্থ্য তাদের ইনডোরে পাঠানো হচ্ছে। আমরা যথাযথ তাদের সুস্থ্য রাখতে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। একই সাথে আমরা তাদের সচেতন করছি।