দিনাজপুরের খানসামায় অপহরনের দুদিন পর মাটির নিচ থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় আরিফুজ্জামান ইসলাম (৮) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক শরিফুল ইসলামকে গতকাল সোমবার পুলিশ কোর্টে সোপর্দ করে।
এর আগে গত রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে খানসামা উপজেলার পাকেরহাট এলাকার জনৈক আব্দুস সালামের ভাড়া দেয়া বাড়ির উঠানে মাটি খুঁড়ে হাত-পা বাঁধাবস্থায় বস্তাবন্দি শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকান্ডের আগে শিশুটিকে বলাৎকার করা হয়েছিল মর্মে পুলিশের কাছে স্বীকার করে আটক আসামী শরিফুল। একই সাথে সেই বাসা থেকে কম্পিউটার ও পর্ণগ্রাফিসহ হার্ডডিস্ক পাওয়া যায় ।
আটক আসামী শরিফুল (২৩) খানসামা উপজেলার কায়েমপুর মাস্টারপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।নিহত আরিফুরজ্জামান ইসলাম খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউপির কায়েমপুর ডাক্তারপাড়া গ্রামের আতিউর রহমানের ছেলে।
গতকাল সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ অপহরন করে হত্যা ঘটনার বিবরন দিয়ে প্রেস ব্রিফ করেন তিনি।
তিনি জানান, গত ২ ডিসেম্ব^র বিকালে কায়েমপুর গ্রামে বাড়ির পাশে খেলার সময় মাঠ থেকে নিখোঁজ হয় আরিফুজ্জামান। এরপর রাত প্রায় ৮টার দিকে মুঠোফোনে একটি নম্বর থেকে শিশু আরিফুজ্জামানের পিতাকে ফোন করে অপহরণের কথা অবগত করে এবং এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ওই রাতেই শিশুর পিতা আতিউর থানায় একটি জিডি করেন। পরে মুঠোফোনের নম্ব^র ও প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত সন্দেহে একই এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৩)কে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশু আরিফুজ্জামানকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করে। এরপর শরিফুলের দেয়া ঠিকানায় গিয়ে রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে ওই বাড়ির উঠানের মাটি খুঁড়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শিশু আরিফুজ্জামানের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এন্ড অপস) মোঃ আসলাম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুনসহ পুলিশ কর্মকর্তা বৃন্দ।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চিত্তরঞ্জন রায় জানান, ঘটনাটি অবগত হওয়ার পর থেকেই শিশুকে উদ্ধারে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ চালিয়ে যায়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহজনক হিসেবে শরিফুলকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে অপহরণ ও হত্যার মামলা করেছেন। সেই মামলায় শরিফুলকে আদালতে পাঠানো হবে।