তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ভিনদেশি গাছের চারা তৈরি ও ফল ফলিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন উঠেছেন তিরনইহাটের আতাউর রহমান খাঁন। কয়েক বছর ধরে কঠোর শ্রমের প সফলতার মধ্য দিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন তিনি।
তিরনইহাট ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে বাড়ি আতাউর রহমানের। ৫০ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘অজি সাইট্রাস বিডি’ নামের নার্সারি। এ নার্সারিতে কলম ও রুট-সায়ন করে তৈরি করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি কমলা-মাল্টার চারা। পাকিস্তানি ও দার্জিলিং কমলা, ইম্পেরিয়াল ম্যান্ডারিন, অস্ট্রিলিয়ান কমলা, মাল্টা বারি ওয়ান গাছের চারা তৈরি করে তা বিক্রির মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি।
মাল্টা-কমলা ছাড়াও নার্সারিতে লাগিয়েছেন ইগ অফ সান (সূর্য ডিম) আলফ্রানসেস, চিয়াংমাই, ব্রোনাই কিং, কিং অফ চাকাপাত, থ্রিটেস্ট, আমেরিকান কেন্ট, ন্যাম ডকমাই গ্রীন, ন্যাম ডকমাই ইয়েলোর মতো ৪০ প্রজাতির আমের গাছ। এসব গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে। মহামারি করোনাকালে প্লাস্টিক বোতলে পেয়াজ-রসুন চাষ করেও অবাক করেছিলেন তিনি।
২৫ শতক চা বাগানে মাল্টা চাষ করছেন। রুট স্টক ও সায়নের মাধ্যমে জাম্বুরা গাছকে কমলা গাছে পরিণত করেছেন তিনি। এসব গাছে ধরেছে প্রচুর মাল্টা। একেকটি গাছে একশোর মতো মাল্টা ধরেছে। এসব মাল্টা বিক্রি করে চা বাগান থেকে বাড়তি আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন আতাউর রহমান।
, কৃষক আতাউর রহমান খাঁন এইচএসসি পড়ার পর আর পড়ালেখা করতে পারেননি। কোন কাজ না পেয়ে ঝুঁকে পড়েন কৃষি আবাদে। কিভাবে নিজস্ব চিন্তায় বিদেশি ফলের চারা তৈরি করা যায় তা নিয়েই ভাবতেই সারাক্ষণ। স‹ুল পড়–য়া ছেলে ফয়সালকে নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি কর্ম। কয়েক বছরে কৃষিতে ঝুঁকে দেখছেন সাফল্যের মুখ। এসব গাছের চারা ফেসবুকের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনলাইনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে বেশ অর্থ আয় করছেন।
ছেলে ফয়সাল জানায়, পড়ালেখার পাশাপাশি বাবাকে সহযোগিতা করছি। বাবার কাছ থেকে কাজ শিখছি। কিভাবে উন্নতমানের গাছ থেকে কলম করতে হয়, বিদেশি গাছ সংগ্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্রহ ও রোপন পদ্ধতি বাবা শিক্ষকের মতো শেখাচ্ছেন।
আতাউর রহমান জানান, কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উচ্চমূল্যের ফলের গাছ সংগ্রহ করে কলম চারা তৈরি করছি। বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি চারা সংগ্রহ করে পরে সেটা রুট-সায়নের মাধ্যমে গ্রাফটিং করি। তা বিক্রি করে বেশ আয় হচ্ছে। এর পাশাপাশি চা বাগান করেছি। তিন বছর হলো ২৫ শতক জমির উপর চা বাগানে মাল্টা চাষ করেছি। বাগানে একশো জাম্বুরার চারা গাছ লাগিয়ে পরে সেটি রুট-সায়নের মাধ্যমে মাল্টা গ্রাফটিং করে সফল হয়েছি। গাছগুলো মাল্টা ধরেছে। চা বাগানে মাল্টা আবাদ করে বেশ আয় করতে পারবো। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমার কাছ অনেকে চারা কিনে নিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, এখানকার চায়ের জমিতে মাল্টা হচ্ছে। বিশেষ করে বেলে-দোআশ মাটিতে নানান বিদেশি ফল ও ফুল চাষ হচ্ছে। এখানকার াষিদের মধ্যে তিরনইহাট এলাকার আতাউর রহমান অন্যতম। তিনি একজন নার্সারির মালিকও। সম্প্রতি তিনি চা বাগানে মাল্টা চাষ সফলতার মুখ দেখছেন। পাশাপাশি নার্সারিতে বিভিন্ন বিদেশি ফলের গাছের চারা তৈরি করে তা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। চা শিল্প অঞ্চলে মাল্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মাল্টা চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।