চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলার আত্রাই ও কাঁকড়া নদীর ওপর জোড়া রেলব্রিজে দর্শনার্থীদের ভিড়ে বাড়তি আয়ে খুশি মাঝিরা। পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের পর চিরিরবন্দর উপজেলার ভূষিরবন্দরে আত্রাই নদীর ব্রিজ ও চিরিরবন্দরের কাঁকড়া নদীর ওপর জোড়া রেলব্রিজ ও নদীতে এবং খানসামা উপজেলার আত্রাই নদীর ব্রিজেরপাড় ও জিরোপয়েন্ট এলাকায় বৃদ্ধি পেতে থাকে ভ্রমণপিপাসু মানুষের আনাগোনা।
এসব স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষ বালুচরে হাঁটছেন। আবার কেউবা নৌকাতে চড়ে ফটোসেশনে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। এসব স্থানে নদীর দুইধারে বসেছে অস্থায়ী ফুসকাসহ বিভিন্ন খাবার ও খেলনার দোকান। বসেছে নাগরদোলাসহ বিভিন্ন খেলা। অনেকেই এসব দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। এর সঙ্গে বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে নৌকা ভ্রমণ।
স্থানীয় লোকজন ও মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন নদী পথে চলাচল অনেক কমে গেছে। বেশির ভাগ মাঝিই পেশা পরিবর্তন করেছেন। যারা এখনো টিকে আছেন, তাঁদের অবস্থাও শোচনীয়।
খানসামা উপজেলার খামারপাড়া, বেলপুকুর ও বীরগঞ্জের তুলশীপুর গ্রামের মাঝিরা নৌকা দিয়ে জনপ্রতি ২০ টাকার বিনিময়ে নৌভ্রমণ করিয়েছেন। অন্য সময় এসব নৌকা নদীতে মাছ শিকার করার কাজে ব্যবহার করা হয়।
খামারপাড়ার মাঝি বিমল দাস জানান, প্রতিটি ঈদ উৎসবসহ অন্য উৎসবে আমরা নৌকায় যাত্রীদের পারাপার করে থাকি। এতে দিনে ৮০০-৯০০ টাকা আয় হয়। ঈদের পর দুই-তিন দিন পর্যন্ত আমাদের এরকম আয় হয়।
বেলপুকুরের মাঝি সুজন দাস জানান, আমাদের আয়ের উৎস কমে গেছে। ঈদেরপর দুই-তিন দিন এমন ভিড়ে কিছু আয় করা সম্ভব হয়।
ভূষিরবন্দরে নৌকায় নদীতে ঘুরে আসা শাকিল আহমেদ, নুরুজ্জামানসহ কয়েকজন বলেন, আমাদের উপজেলায় ঘুরতে যাওয়ার মতো তেমন কোনো স্থান নেই। তাই নদীর পাড়েই সবাই ঘুরতে আসে। তবে গাড়ি পার্কিং ও মানসম্মত খাওয়ার হোটেল সংকট থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। খানসামা শিশুপার্কেও ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানা পুলিশ পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছে। বেড়াতে বা ঘুরতে এসে যেন কেউ হয়রানির স্বীকার না হন।
খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন বলেন, ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় ঘাটপাড় এলাকায় বসার স্থান ও দর্শনীয় স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, কাজ শেষ হলে এটি এলাকার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হবে।