সোমবার , ১ জুলাই ২০২৪ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুরে মহান সান্তাল বিদ্রোহ দিবস উদযাপন

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
জুলাই ১, ২০২৪ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ

৩০ জুন মহান শাওতাল বিদ্রোহ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে চাম্পাগড়ঃ সাওতালী ভাষা ও সামাজিক সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে দিনাজপুর সদরের উত্তর গোবিন্দপুর (খাটাংপাড়া) সিধু কানু স্মৃতিস্তম্ভে ঐতিহাসিক সান্তাল বিদ্রোহ দিবসের র‌্যালী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সান্তাল বিদ্রোহ দিবসের সকল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ সকল কর্মসূচির মধ্যে সকাল ১০টা ৩০মিনিটে সিধু কানু স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্প স্তবক অর্পণ শেষে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী এলাকার সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সকাল ১১টা ৩০মিনিটে আলোচনা সভা এবং দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চম্পাগড়ঃ সান্তালী ভাষা ও সামাজিক সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সংগঠনের মহাসচিব যোগেন জুলিয়ান বেসরা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কসবা মিশনের ফাদার ভিনসেন্ট মুরমু, সুইহারি মিশনের ফাদার মাইকেল মুরমু এবং পল্লী বিদ্যুৎ মিশনের ফাদার শিমন হাঁসদা.টিওয়ার, চেলগাজী ইউনিয়নের পারগানা মিঃ শিরিল হেম্রম, মহিলা প্রতিনিধি লুচিয়া মার্ডি প্রমূখ। লুচিয়া মার্ডি এর উপস্থাপনায় অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের কোষাধক্ষ্য মাইকেল মার্ডি, সদস্য সালভাতর পাউরিয়া, রবি মার্ডি প্রমুখ।
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল “সাঁওতাল অভ্যুত্থান” তার নাম। ভারত বর্ষের পাকুড় জেলার পশ্চিমে ৪০ মাইল দূরের ভগনাডিহি গ্রামে সে সময় একটি অবস্থাপন্ন সাঁওতাল-পরিবার থাকত, ঘটনাচক্রে যারা ওই মহাজন শ্রেনীর সর্বপ্রথম বলি হয়েছিল। পরিবারটি ছিল চার ভাইয়ের। এদের নাম ছিল সিধু, কানু, চাঁদ আর ভৈরব; সীমাহীন অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছিল তারা। সাঁওতাল কৃষক স¤প্রদায় গান গাইতে গাইতে হাতে তীর-ধনুক নিয়ে জমিদার, মহাজন ও সরকার-এই তিন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে খোলাখুলি সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ডাক দিয়ে পতাকা তুলল। চরম নির্যাতিত ও অপমানিত সাঁওতাল সমাজ সর্বসম্মতিক্রমে অন্যায় অত্যাচারের পরিবর্তে শান্তি ও নিরাপত্তার দাবি করল। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আরও রক্তপাত, শান্তিদান ও অশান্তি জিইয়ে রাখতে চাইল। এই অসম যুদ্ধে বহু সংখ্যক সাঁওতাল কৃষককে পণবন্দি ও কারারুদ্ধ করে রাখা হল।
এই সাঁওতাল মহা অভুত্থান নির্মমভাবে দমন করা হয়। এইখানেই সাঁওতালদের বা বস্তুতপক্ষে ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের কৃষকদের ওপর অত্যাচারের শেষ নয়। বরং এই অত্যাচার আরও তীব্রতর হল। এতদসত্তে¡ও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক দিয়ে এই সাঁওতাল অভ্যুত্থান অনেকটাই সফল হয়েছিল। সাঁওতাল অঞ্চলকে প্রশাসনিক দিক দিয়ে টুকরো টুকরো করে প্রতিবেশী জেলাগুলির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল এবং সাঁওতাল পরগনা নামে পৃথকভাবে পুনঃ সংগঠিত করা হল। অতএব সাঁওতালরা জাতীয় পর্যায়ে সংখ্যালঘু স¤প্রদায় হিসেবে এক বিশেষ মর্যাদা আদায় করতে সফল হয়েছিল।
অভ্যুত্থানের জন্য যে সব প্রকৃত সংগ্রাম গড়ে উঠেছিল তার কোলাহল থিতিয়ে এল। কিন্তু তার প্রতিধ্বনি বছরের পর বছর আরও সোচ্চার হয়ে উঠেছিল। ফলে বিভিন্ন জায়গা থেকে আরও অধিক সংখ্যায় কৃষকরা জমিদারি অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে যোগ দিল। ৩০ জুন, ১৮৫৫ সেই কালরাত্রিতে সাঁওতালরা ভগনাডিহিতে যে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিল, তা দেশের অন্যান্য প্রান্তেও পৌঁছে গিয়েছিল, যার প্রতিধ্বনি ১৮৬০-এর নীলচাষীদের ধর্মঘট, ১৮৭২-এর পাবনা ও বগুড়ার বিদ্রোহ, ১৮৭৫-৭৬-এ পুণা ও আহমেদনগরের মারাঠা কৃষক অভ্যুত্থানের সময় শোনা গিয়েছিল। অবশেষে এর ফলশ্রæতি হিসেবে সারা দেশের কৃষক স¤প্রদায় জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক জোরদার দাবি তুলল। সাঁওতালদের রক্তে লেখা এই ¯েøাগান মোটা হরফে জ্বল জ্বল করতে লাগল। তারপর থেকেই সশস্ত্র সংগ্রামের এই আদর্শ জনে জনে ভারতবর্ষের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ল।
বিরল
বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ দিনাজপুরের বিরলে ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকালে উপজেলা রাণীপুকুর ইউপি’র বহবলদিঘী মিশনের মাঠে উপজেলা আদিবাসী সমবায় সমিতি লিঃ এর আয়োজনে এবং ইএসডিও’র প্রেমদীপ প্রকল্পের সহযোগীতায় ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা আদিবাসী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হারুন এক্কার সভাপতিত্বে এবং আদিবাসী নেতা বিমল পাহানের সঞ্চালোনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, ১০ নং রাণীপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল্লামা আজাদ ইকবাল লাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, বিরল প্রেসক্লাব ও হামেরা দিনাজপুরিয়া সংগঠনের সভাপতি এম, এ কুদ্দুস সরকার ও ইএসডিও’র প্রেমদীপ প্রকল্পের ফিল্ড সুপার ভাইজার মোঃ সুজন। এছাড়া স্থানীয় আদিবাসী নেতা লক্ষিরাম মরমু, জগেন কড়া, জগেশ ভুঞ্জারসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের আগে একটি র‌্যালী বের হয়ে বহলবলদিঘী বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কাহারোল
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি, সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেছেন, নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে কাঙ্খিত সাফল্য এখনও অর্জিত হয়নি। তাদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রচেস্টা চালালেও দেখা গেছে, ব্যক্তিদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।
রোববার ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষ্যে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর মোড়ে অবস্থিত তেভাগা চত্বরে সিদু-কানুর ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কাহারোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ, ডায়াবেটিস চিকিৎসক ডিসি রায়, কাহারোল উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন মার্ডি, সাবেক চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য মোখলেছুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম, ইউপি সদস্য মো. আজিজুল ইসলাম।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

রানীশংকৈলে ১৪৩১বাংলা নববর্ষের র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দিনাজপুরে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

এম.এ কুদ্দুস সভাপতি, মতিউর সাধারণ সম্পাদক বিরল প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন

বিশাল জয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়

ঠাকুরগাঁওয়ে সীমান্ত হত্যা ও বিদেশী আগ্রাসন বন্ধের দাবীতে লাশের মিছিল !

বীরগঞ্জে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম আশ্রয়ন প্রকল্প কাজ পরিদর্শন

খানসামায় ১১ বছর আগের চাঁদাবাজি ও  বিএনপি’র কার্যালয় ভাংচুরের মামলা

খানসামায় ১১ বছর আগের চাঁদাবাজি ও বিএনপি’র কার্যালয় ভাংচুরের মামলা

এক সপ্তাহ ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়

আটোয়ারীতে ৫ জুয়ারুকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড

৫বছরেও শেষ হয়নি সেতুর  নির্মাণ \ ভোগান্তিতে মানুষ

৫বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ \ ভোগান্তিতে মানুষ