রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মরহুম মুনসুর- উল- আলম স্যার।পাশে তাঁর স্ত্রী,স্যারের কোলে বড় ছেলে স্বপন,ম্যাডামের কোলে ছোট ছেলে নয়ন।স্বপন আমার সতীর্থ এবং অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু।অনেক স্মৃতি তার সাথে।অনার্সে পড়ার সময় আমি টাইফয়েডে আক্রান্ত হই।প্রায় ২০ দিন বিছানায় ছিলাম তখন স্বপন আমাকে যে সেবাটা দিয়েছিলো তা এই সংক্ষিপ্ত লেখায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
ম্যাডাম অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে মৃত্যু বরণ করেছিলো অনেক আগে।মা হারা হয়ে দুভাই স্বপন- নয়ন কখনো দিনাজপুর নানার বাড়ি কখনো রানীশংকৈলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতো।শুনেছি ছোট ভাই নয়ন নানার বাড়িতে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।
মুনসুর উল আলম ইংরেজির স্যার ছিলেন স্বপনও ইংরেজিতে দখল নিয়েছিলো।দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর আবার সে রানীশংকৈলে আসে।তখন সে যুবক।তার সব চেয়ে ঘনিষ্ঠজন হয়ে উঠি আমি।তাকে সানরাইজ কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করিয়ে দিই।সে সময় স্যার মারা যাবার পরে স্বপন আবার রানীশংকৈল থেকে চলে যায়।কিছুদিন ঠাকুরগাঁয় থাকে।পরে সেখান থেকেও চলে যায়।কোথায় যায় জানা যায় নি।এটি ২০০০ সালের আগের ঘটনা।ফোন না থাকায় কোন যোগাযোগও করা সম্ভব হয় নি।
তবে কিছুদিন আগে কোন এক ভাবে জানা গেল সে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী দিয়ে পাড় ভারতে অবস্থান
করতো।যতটুকু জানা যায় সেখানকার ঘটনাও অত্যন্ত বিস্ময়কর এবং মর্মান্তিক।শুনেছি তার করুণ মৃত্যু হয়েছে।তবে সে ভারতে যেখানে থাকতো সেখানকার লোকেরা নাকি তাকে খুব শ্রদ্ধা করতো।এখনো নাকি তার মৃত্যু দিনটাকে স্মরণ করে এবং তার কবর জিয়ারত করে।তবে এ নিয়েও রয়েছে লোমহর্ষক কাহিনী পরে সম্ভব হলে লিখবো।তবে ভীষণ ভীষণ কষ্ট হয় বন্ধু স্বপনের জন্য।যদি একবার তাকে পেতাম. …..!
মুনসুর- উল- আলম স্যার বিদগ্ধ মানুষ।ভালো মানের ইংরেজি জানতেন।কমিউনিজমে বিশ্বাসী স্যার ছিলেন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক।স্যারের কাছে ইংরেজির পাঠ নিয়ে এখন অনেকেই প্রতিষ্ঠিত।শেষকালে একাই জীবনযাপন করতেন।মজার বিষয় হলো আমার সাথেও স্যারের ছিলো অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা।সংগীতেও তাঁর হাত ছিলো। তিনি আমাদের সংগীত গুরু মোজাম্মেল হক ভইয়েরও সংগীত গুরু ছিলেন।
বিদগ্ধ এই গুণী মানুষটির পারিবারিক ট্্রাজিক পরিণতি খুব কষ্ট দেয়।
লেখক
প্রশান্ত কুমার বসাক
সহকারি অধ্যাপক
রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ।