বোচাগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\ ধান-লিচুতে ভরপুর দিনাজপুর জেলা।এ জেলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। ধানের জেলা হিসেবে দিনাজপুরের সুনাম দীর্ঘদিনের। তবে এবার প্রথমবারের মতো এই জেলায় চাষ হচ্ছে শীতপ্রধান দেশের ফুল টিউলিপ।
এ ফুলের সৌন্দর্য যেমন মনোমুগ্ধকর, ঠিক তেমনি অর্থনৈতিক দিক দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ। রাজকীয় এ টিউলিপ ফুল ফুটেছে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হাছিনুর রহমান চৌধুরীর বাগানে। তিনি প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ভাবে দুই শতক জমিতে পাঁচ জাতের ৫০০ চারা লাগিয়েছেন। এই মধ্যে কিছু গাছে হলুদ ও লাল রঙের টিউলিপ ফুটেছে।
জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি পঞ্চগড় থেকে চারা এনে হাছিনুর রহমান চৌধুরী তার নিজস্ব জমিতে পরীক্ষামূলক রোপন করেন। তার দুই শতক জমিতে ৫০০ টিউলিপ আছে। এই টিউলিপ ফুলের বাগানে খরচ হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা।
টিউলিপ বাগানের মালিক হাছিনুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার ভাতিজা তাছিকুল আলম তপু ঢাকায় সোলার পাওযারে চাকরি করে। সেই সুবাদে পঞ্চগড়ে ঘুরতে আসে। তখন সে পঞ্চগড়ে টিউলিপ চাষ করতে দেখে আমাকে উৎসাহিত করে।
তিনি আরও বলেন, আমি তখন পঞ্চগড় থেকে পাঁচ জাতের ৫০০ চারা কিনি। সেগুলো পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করি। এই চারা রোপণের ১৩ দিন পরেই হলুদ রঙের কিছু গাছে টিউলিপ ফুল ফুটেছে।’ আমি আশা করছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাকি সব গাছে টিউলিপ ফুটবে।
হাছিনুর রহমান বলেন, ‘এবার যদি সফল হতে পারি তাহলে আগামী বছরে দেড একর জমিতে টিউলিপ চাষ করবো। আমি এখন টিউলিপ নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করছি।
টিউলিপ বাগানে মানুষ দেখতে আসতেছে কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার টিউলিপ বাগান দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। তবে পরিচর্যা ও নিরাপত্তার জন্য এখনো কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।’ যারা আসতেছে তারা নেটের বাইরে থেকে দেখে চলে যাচ্ছেন।
বোচাগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি অফিসার মাহাবুব রহমান বলেন, ‘টিউলিপ চাষের বিষয়ে জানতে পেরে আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। উনাকে কিছু পরামর্শ দিয়েছি। তিনি দক্ষতার সঙ্গেই টিউলিপ চাষ করছেন।
বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা বলেন, টিউলিপ চাষের বিষয়ে জানতে পেরে উপসহকারী কৃষি অফিসার পরিদর্শনে গিয়েছিল। উপসহকারী কৃষি অফিসার উনাকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছে। কৃষিবিভাগের পক্ষ থেকে হাছিনুর ভাইকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।আমি হাছিনুর সাহেবের এমন উদ্দ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।বাগান মালিক প্রথমে সৌখিনতাবশতঃ টিউলিপ বাগানের কথা বললেও এই অঞ্চলের মাটিতে টিউলিপের ফুল ফোটায় তিনি সামনে বাণিজ্যিক হিসেবে বাগানের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান।