আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে গৃহবধূকে নির্যাতন করার অভিযোগে তাঁর স্বামী মাসুদ রানা, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেছে নির্যাতিত গৃহবধু। গত বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী।
এদিকে ২২ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টা ও মারধর করা হয়। বিষয়টি গৃহবধূর পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাঁকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় তিন দিন পর ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানায় মামলা করতে গেলে কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করে মামলা নেয়নি। পরে গত বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
মামলায় স্বামী মাসুদ রানা, শ্বশুর মোহাম্মদ আলী ও শাশুড়ি সুফিয়া বেগমকে আসামি করা হয়েছে। পরে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল এবং আগামী ২৮ অক্টোবর অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চড়ুইগদি গ্রামের মাসুদ রানার সঙ্গে গত ১৬ এপ্রিল মামলার বাদীর কাবিননামা মূলে বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই মাসুদের পরিবারের লোকজন তাঁকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে না নিয়ে বাড়ির ঘরে প্রবেশ করতে দেননি। মাসুদ ঢাকায় চলে গেলে ওই নববধূ বারান্দায় কার্পেট বিছিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। এ অবস্থায় মাসুদের পরিবারের লোকজন গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দাবি করে গত ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা ও বেধড়ক মারধর করেন স্বামীর পরিবারের সদস্যরা।
এর আগে গত ২৫ জুলাই রাতে আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে বড়বাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকরাম আলী ও আমজানখোর ইউপি চেয়ারম্যান আকালু (ডংগা) সহ স্থানীয় গণামান্য বক্তিবর্গ নির্যাতিত গৃহবধু ও মাসুদ রানা এবং তার পরিবারের লোকজনসহ ২ শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত। সেখানে ৩’শ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে উভয়ের স্বাক্ষর করে সুখে সংসার করার অঙ্গীকার করলেও ১ মাসের মাথায় পুনরায় গৃহবধুর উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়।