তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় দুই ক্ষুদ্র চা চাষিকে নির্যাতন করায় মরগেন চা কারখানার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে উপজেলার শালবাহান রোডে মাঝিপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ক্ষুদ্র চা চাষি নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি। সেই সাথে কাচা চা পাতার ন্যায্য মূল্য পেতে দাবি করেছেন চা চাষিরা।
সভায় এডভোকেট রফিকুল ইসলাম রফিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলার সদর উপজেলার ১ নং অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আনিসুজ্জামান প্রামাণিক, বেলাল মুন্সি, আজিজুল হক, হাবিুবর রহমান হবি, হামিদা বেগম, এমদাদুল, হানিফ, সাদ্দাম, প্রমুখ। প্রতিবাদ সভায় জেলার ও তেঁতুলিয়া উপজেলার সহ¯্রাধিক চা চাষি অংশ নেন।
সভায় বক্তারা বলেন, পঞ্চগড়ের চা কারখানার মালিকরা ক্ষুদ্র চা চাষিদের চা পাতা ন্যায্য মূল্যে না কিনে সিন্ডিকেট তৈরি করে চাষিদের বিপাকে ফেলেছে। চাষিদের উপর তারা ইংরেজ নীলকরদের মতো নিযার্তন করছেন। বাগান থেকে উত্তোলিত কাঁচা চা পাতা কারখানায় উৎপাদনের মূল্যের চেয়ে লোকসান দিয়ে বিক্রয় করতে হচ্ছে। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ৪০-৫০ % পর্যন্ত পাতা কেটে নিচ্ছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে পাতা নেয়া বন্ধ করে দেন, কখনো অপমান করে ফ্যাক্টরি থেকে বের করে দিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালান। গত মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের বোর্ড অফিস সংলগ্ন মর্গেন চা কারখানায় ওমর ফারুকসহ দুজন চা চাষিকে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে উল্টো মিথ্যা অভিযোগ টেনে অমরখানা নুরুজ্জামান নুরু চেয়ারম্যানকে আসামী করে মিথ্যা মামলা করেছেন। অবিলম্বে এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে চা চাষিদের উপর নির্যাতন করার তীব্র প্রতিবাদ জানান।
বক্তারা আরও বলেন, পঞ্চগড়ে চা সিন্ডিকেটের খলনায়ক মর্গেন চা কারখানার মালিক নেওয়াজ চিশতি। তিনিই সিন্ডিকেটের মূল হোতা। এতদিন ধরে তার কারণেই চা পাতার ন্যায্য মুল্য না পেয়ে লোকসান দিয়ে পাতা বিক্রি করতে হচ্ছে। গত মঙ্গলবার কারখানায় চাষিদের দ্বারা হামলার মিথ্যে অভিযোগ টেনে জেলার ২২টা কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন। চা পাতা ক্রয় নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক ১৮টাকা নির্ধারণ করা হলেও কারখানার মালিকরা সরকারের প্রতিনিধি জেলা প্রশাসককেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাচ্ছেন। তারা ১৮ টাকা কাচা চা পাতা না কিনে ১২-১৩টাকায় পাতা কিনছে। এ সময় বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত মর্গেন টি ফ্যাক্টরির মালিক চিশতি চাষি নির্যাতন করে ক্ষমা না চায় আমরা মর্গেন চা কারখানায় পাতা দিব না। প্রয়োজনে আমরা চা বাগান কেটে অন্য আবাদ করবো। এ সময় বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন তারা।