বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধি : ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সমগ্র উপজেলায় গত দু’দিন থেকে সূর্যের দেখা মিলেনি। ফলে পৌরশহর ও গ্রামগঞ্জের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতে ও ঘন কুয়াশায় রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষ চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। দূরপালার যানবাহন চলাচল করছেন হেড লাইট জ্বালিয়ে। হাতে কাজ না থাকায় অভাবী হতদরিদ্ররা চরম সংকটে পড়েছে। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত কারণে সর্দি, কাশি, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বুধবার দিনভর মৃদ কুয়াশা ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে এর ঘনত্ব বাড়ে আর পাশাপাশি চলছে প্রচন্ড বাতাস। রাত ১০টার পর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় পুরো এলাকা। ফলে বীরগঞ্জ পৌরশহরে বিপণী -বিতান, বাস স্টেশন, অটোরিকশা স্ট্যান্ডসহ কোলাহলপূর্ণ স্থানগুলো মুহূর্তেই জনশূন্য হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার ভোর বেলা থেকেই এলাকায় ঘন কুয়াশা ও শীত আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। ফলে অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায় শহর ও গ্রাম। ফুটপাতের সবজি,মাছ,ফলমূল ও শীতের কাপড় ব্যবসায়ীরা বেচাকেনা না থাকায় সন্ধ্যার পরপরই দোকান গুটিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন অনেকেই। অটোরিকশা, ভ্যান,পাগলু, রিকশাচালকরাও সন্ধ্যা নামলেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে, ভাড়ার আশায় আর বসে থাকছেন না। এ বিষয়ে বীরগঞ্জ পৌরশহরের ভ্যানচালক ষোল মাইল এলাকার শামসুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে শীতের তীব্রতা প্রকট হওয়ায় গত রাতে রিকশা চালানো গেছে কিন্তু ভোর থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত রিকশা চালানো সম্ভব হয়নি। বেলা ১২টার দিকে মাত্র একজন যাত্রী পরিবহন করে ১৫ টাকা ভাড়া পেয়েছি। বালাকা মোড় এলাকার সবজি বিক্রেতা মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন,ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এতে করে অর্ধেক সবজিও বেচাকেনা হয়নি। বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সাজু বলেন,ঘন কুয়াশার কারণে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত সূর্য্যের দেখা নেই। ফলে আমাদের গ্রামে তীব্র শীত পড়েছে। অভাবী মানুষ ও শ্রমজীবীরা মাঠেঘাটে কাজ করতে পারছে না। শীতবস্ত্রের অভাবে হতদরিদ্র মানুষজন খড়কুটা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সবমিলিয়ে প্রচন্ড শীতের তান্ডবে এই উপজেলার জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পরেছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের বলেন,বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম,পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর,ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নসহ প্রথম পর্যায় সরকারি ভাবে ইতোমধ্যে ৫ হাজার কম্বল দেওয়া হচ্ছে। অসহায় হতদরিদ্র শীততা মানুষগুলো যেন কোনোভাবে কষ্ট না পায় সেদিকে নজরদারী দেওয়া হয়েছে।