বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জে অল্পের জন্যে বিষপান করা থেকে প্রাণে বেঁচে গেলো এতিখানার ২৩ জন ছাত্র। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরগঞ্জ উপজেলার পৌরশহরের ৯ নং ওয়ার্ডের ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের পার্শে অবস্থিত জেলখানা বাগে সুন্নাত নুরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় খাবারের সাথে মিশ্রিত বিষপানের হাত থেকে সৌভাগ্যক্রমে শনিবার রাতে বেঁচে গেলো ২৩ শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। উল্লেখিত বিষয়ে সংবাদ পেলে ঘটনার পরদিন বিকেলে সরেজমিনে এই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সহকারী শিক্ষক আবু তাহের,দ্বায়িত্বরত মাহ তামিম মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও উপস্থিত পাওয়া শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হলে প্রথমে বিষয়টি এরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরিশেষে সত্যতা নিশ্চিত করে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, প্রতি দিনের মতো যথারীতি গত ৩০ জুলাই এশার নামাজ আদায় করে আবাসিক ছাত্রদের রাতের খাবার বন্ঠন করাকালে রান্না ঘরে রান্নাকরা কাঁচা কলার তরকারি থেকে হঠাৎ বিষের মতো উগ্র গন্ধ পাওয়া যায়। বিষ মিশানো হয়েছে মর্মে নিশ্চিত হয়ে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণের জামে মসজিদের ওযু খানার পাশেই এই খাবার ফেলে দিয়ে নতুন করে রান্না করা হয় তরকারি। এখানে নিয়মিত সকালে ও সন্ধ্যায় দুবার খাবার রান্না করে মাদ্রাসা পার্শ্ববর্তী বাড়ির বয়স্ক মহিলা হাসিনা বেগম। হাসিনা তার রান্না শেষ করে রান্নাকৃত খাবার রান্না ঘরেই রেখে দিয়ে নিজের জন্য ভাত, তরকারি নিয়ে বাড়িতে চলে যায়। পরবর্তীতে রাতের আহারের সময় বিষের গন্ধ পাওয়ায় সেই তরকারি ফেলে দিয়ে পুনরায় রান্না করে তা খাওয়া হয়। তবে রান্না ঘরে সেদিনের রান্নায় ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের একটি ছোট বোতলে বিষের গন্ধ পাওয়া গেলে সেটির পরিবর্তে অফিস রুমে থাকা সয়াবিন দিয়ে তরকারি রান্না করে তাই দিয়ে এই ২৩ জন আবাসিক ছাত্রকে খাওয়ানো হয়। এবিষয়ে প্রাথমিক ধারণা করে এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক ও অত্র ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাইজউদ্দীন জানান, শত্রুতা বশত কোন দুঃকৃতিকারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণের মসজিদে এশার নামাজ পড়ার সময় সুযোগবুঝে হয়তোবা এই ন্যক্কারজনক কাজটি করতে পারে । অনাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে মাহতামিম জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আনসারি হুজুর সহ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সকলকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে এবং সকলের আলোচনা ও সীদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রশাসনকে অবগত করা হবে। তবে ঘটনাটি ধামাচাপার উদ্দেশ্যে প্রথমে না জানানো হলেও নিজেদের সন্তান আবাসিক শাখার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তারা জানতে পারে বলেও জানায় কয়েকজন অভিভাবক। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান কতৃপক্ষ তরকারিতে বিষ প্রয়োগের বিষয়টি গোপন রেখে কেনো প্রকারের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্থানীয় জনমনে নানাধরণের মিশ্র প্রতিক্রিয়া সহ আলোচনা- সমালোচনা তুঙ্গে। তবে এতগুলো আবাসিক ছাত্র ও সহকারী শিক্ষক গন্ধ বুঝতে পেরে সৌভাগ্যক্রমে প্রানে বেঁচে গেলেও বিষয়টি সমন্ধে উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ও আশু হস্তক্ষেপে সহজেই থলের বিড়াল প্রকৃত অপরাধী বেরিয়ে আসবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় সচেতন মহলের অনেকেই এবং একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠনের দাবী জানান। এব্যাপারে, বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিনাত রেহানার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান,এতিমখানায় শিক্ষার্থীদের খাবারের মধ্যে বিষ মিশানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অবগত করেননি।