সোমবার , ১৫ আগস্ট ২০২২ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আটোয়ারীতে নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
আগস্ট ১৫, ২০২২ ২:৫৬ অপরাহ্ণ

মনোজ রায় হিরু, আটোয়ারী, পঞ্চগড় ঃ
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সোমবার (১৫ আগষ্ট) সকালে উপজেলা পরিষদে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুষ্প্য মাল্য অর্পনের মধ্যদিয়ে শোক দিবসের কর্মসূচী শুরু হয়। কর্মসূচীর মধ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ, কালো ব্যাচ ধারন, রচনা, কবিতা আবৃতি ও চিত্রাঙ্কনে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ, যুব লোনের চেক হন্তান্তর এবং হাসাপাতালে রোগীদের উন্নত খাবার পরিবেশন সহ মন্দির-মসজিদে বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য। উপজেলা আওয়ামীলীগের আায়োজনে আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মো: মজাহারুল হক প্রধান উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: তৌহিদুল ইসলাম এবং সভা পরিচালনা করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: এমদাদুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মকলেছুর রহমান।
এদিকে আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মুসফিকুল আলম হালিমের সভাপতিত্বে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানসুচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। গৃহীত শোক দিবসের কর্মসূচীতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সোহেল রানা, উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা: নুরজাহান খাতুন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডাঃ মো: হুমায়ুন কবির প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ, পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে শোক দিবসের কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করেন।
উল্লেখ্য, আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকের দিন। জাতির জনককে স্বপরিবারে নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ৪৭ বছর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে রাজধানী ঢাকায় সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসের সেই কলঙ্কিত অধ্যায়। এদিন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালির মহানায়ককে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল।
বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তাঁর চেতনা অবিনশ্বর। মুজিব আদর্শে শানিত বাংলার আকাশ-বাতাস, জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবাহমান থাকবে। জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ পালন করছে।
বঙ্গবন্ধু ছাড়াও ১৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির বাড়িতে তাঁর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাকে, তার অনÍসত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে তাকে ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় রেন্টু খানকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার এবং নিকটাত্মীয়সহ ২৬ জনকে ওই রাতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় তাঁরা প্রাণ বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহন করেছিলেন। তিঁনি ছাত্র অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফার প্রণেতা ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতীকে পরিণত করেন। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ্রদৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র পাঠ করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা। জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এই স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। হত্যাকারীদের প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল ঘৃণার বিষবাষ্প। এ প্রসঙ্গে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙ্গালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙ্গালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে, তারা যেকোনও জঘন্য কাজ করতে পারে।
বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পুনর্বাসিত হতে থাকে। তারা এ দেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে নানা উদ্যোগ নেয়। শাসকদের রোষানলে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণও যেন নিষিদ্ধ হয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল মোশতাক সরকার। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন হলে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করে বিচার কার্য শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, দীর্ঘ ৩৫ বছরেরও বেশি সময় পর ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি সেই কলঙ্ক থেকে জাতির কিছুটা মুক্তি ঘটে। ওই দিন মধ্যরাতের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার চূড়ান্ত বিচারের রায় অনুযায়ী পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। অনেক পরে খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের ফাঁসিও দেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন দেশে অন্যান্য খুনিরা পলাতক থাকায় বাকিদের সাজা এখনও কার্যকর হয়নি। অবিলম্বে বাকী খুনীদের সাজা কার্যকর করা হউক এই হোক জাতীয় শোক দিবসের অঙ্গীকার।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

বঙ্গবন্ধু কন্যা নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন -হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি

আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন —- সাবেক এমপি ইমদাদুল হক

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে খানসামায় বিএনপির লিফলেট বিতরণ

বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

দিনাজপুরে ওয়ার্কার্স পার্টি’র বর্ধিত সভায় মাহমুদুল হাসান মানিক গরিব মেহেনতি মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ হলো সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা

বীরগঞ্জে মাদক-ধর্ষণ ও বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের শপথ

বীরগঞ্জে সংবর্ধনা ও বরণ অনুষ্ঠান

যারা বঙ্গবন্ধুকে চেনেন না তারা তাদের জন্ম সম্পর্কে সন্দিহান -মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি

আজ হরিপুরের তরুণ সাংবাদিক নূর মোহাম্মদ এর ২৬ তম জন্মদিন

বিশ^ জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে র‌্যালী ও আলোচনা সভা