হাবিপ্রবি প্রতিনিধি\ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২২ খ্রী. উপলক্ষ্যে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) আজ দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি, মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সভায় সভাপতিত্ব করেন হাবিপ্রবির মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। উক্ত আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তাগণ জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন, শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে অবস্থান প‚র্বক হল সুপারগণের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেন এবং কর্মচারীগণ জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার ফেইসবুক পেইজের লাইভ এর মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। আলোচনা সভার শুরুতেই ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এ সময় ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট দুটোর মাঝেই ধারাবাহিকতা আছে। ১৫ আগস্ট তাদের অসমাপ্ত কাজ সফল করতেই ২১ আগস্ট জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর হামলা করা হয়, সেখানে ২৪ জন মানুষ প্রাণ হারান, ৫০০ এর উপরে মানুষ আহত হয়। এভাবে ১৯ বার শেখ হাসিনার উপর হামলা করা হয়। ওইদিন এর ঘটনার জন্য বিস্তারিত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। নাহলে আরও হামলা হওয়ার আশংকা থেকেই যায়। এ ব্যাপারে আমি নিজেই আইনমন্ত্রীর সাথে কয়েকবার কথা বলেছি। ১৫ আগস্ট এর হামলার মত ২১ আগস্ট এর হামলার পেছনে দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্র আছে। ১৫ আগস্ট এর ঘটনায় সেনাবাহিনী প্রধান ও তিন বাহিনী প্রধান কি দায় এড়াতে পারেন? আমি সেটা মনে করিনা। তিনি বলেন, ২১ আগস্ট যদি নেতারা মানবঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনা কে রক্ষা না করতেন তাহলে আজ আমরা তাকে আমাদের মাঝে পেতাম না, ওইদিন শেখ হাসিনা গাড়িতে উঠার পরও তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়।
আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার স্বপ্ন নিজে দেখেছেন, জনগণ কে উজ্জীবিত করেছেন এবং স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যেদিন ভারতের বিমান বন্দরে নামেন সেদিন সকল প্রটোকল ভেঙে ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীসভার সদস্যরা সেখানে তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একজন জাতীয় নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিশ্ব নেতা। বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান তৈরি করেছিলেন সে সংবিধান কে কাটা ছেঁড়া করে অনেক পরিবর্তন করেছিল ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট এর ঘাতকরা । এরা এখনো থেমে নেই, প্রতিনিয়ত জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে হত্যার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও তার অসম্প‚র্ণ কাজ গুলো শেষ করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে কিন্তু এর পেছনের মদদ দাতারা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে গেছে। এদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে নেই কিন্তু তার আদর্শ আমাদের মাঝে হাজার বছর বেঁচে থাকবে। তার স্বপ্ন ও আদর্শ ধারণ করেই আমাদের কাজ করে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত কে শক্তিশালী করতে হবে, তবেই দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ধারা চলমান থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বলেন আগস্ট মাস শোকের মাস। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে ঘাতকদের হাতে নিহত জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সকল শহীদকে। আমি মনে করি আজকের দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তির আলোচনার মধ্যে দিয়ে আমরা অনেক সমৃদ্ধ হয়েছি। কারণ তারা দুজনই জাতির পিতার সঙ্গে কাজ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্বাধীনতার রূপকার, তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর চেতনা অবিনশ্বর। জাতির পিতার আদর্শের যোগ্য উত্তরসুরি দেশরতœ শেখ হাসিনার মেধা, প্রজ্ঞা, দ‚রদর্শীতা আর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পৃথিবীব্যাপী কোভিড-১১ মহামারিতেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কোভিত-১৯ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ বাংলাদেশের ভাবম‚র্তিকে উজ্জ্বল করেছে সারাবিশ্বে। বর্তমান বাস্তবতায় হয়তো আমাদের সাময়িক কিছু কষ্ট হচ্ছে তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ‚রদর্শী ভাবনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। একটু কষ্ট করলে ভবিষ্যতে আমরা অবশ্যই ভালো থাকবো। আমি সকলের উদ্দেশ্যে বলবো আসুন আমরা জাতির পিতার আদর্শ কে ধারণ করে যার যার জায়গা থেকে কাজ করে যাই