বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পাগলপাড়ার আলোচিত যমজ বোন মণি-মুক্তার সোমবার জন্মদিন (২২ আগস্ট -২০২২) তারা ১৪ বছরে পা দিয়েছে। ১৩ বছর আগে মণি-মুক্তা জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়। পরে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে দুই বোনকে আলাদা করা হয়। বাংলাদেশে প্রথম অস্ত্রপোচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর সফল পৃথককরণ করা হয়। আর ঝুঁকিপূর্ণ এ চিকিৎসায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক এ আর খানের সাফল্য বিশ্ব দরবারে চিকিৎসাবিজ্ঞানকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলেছে।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের জয় প্রকাশ পালের মেয়ে মণি-মুক্তা। মা-বাবার কোলে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মণি-মুক্তা এখন ঝাড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২২ আগস্ট) নিজ বাড়িতে ঘরোয়া পরিবেশে উদযাপন করা হলো মণি-মুক্তার জন্মদিন। প্রতি বছর শিক্ষক ও তাদের বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এবারও সকাল ১০টায় এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে আনন্দ ঘন পরিবেশ মণি-মুক্তার জন্মদিন পালিত করেন তাদের বাবা জয় প্রকাশ পাল। দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মণি-মুক্তা বলে, আমরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব এবং সমাজের অবহেলিত মানুষের পাশে থাকব। জয় প্রকাশ পাল ও কৃষ্ণা রানী পালের ঘরে ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি-মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়। পরে রংপুরের চিকিৎসকরা তাদের মা-বাবাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মণি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়। ৮ ফ্রেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি-মুক্তা ভিন্ন সত্ত্বা ও ভিন্ন জীবন লাভ করে। তখন থেকেই বাংলাদেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।