মোঃ মজিবর রহমান শেখ,,
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খাদ্য গুদাম থেকে আমন চালের বস্তা বের করে সেখানে হাইব্রিড ধানের চাল রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের তদন্ত করে সততা পেয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য বিভাগ। তবে কি পরিমাণ চাল বদল করা হয়েছে । তা জানা যায়নি।
গুদামের কর্মচারীরা বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ও সি- এল- এসডি )প্রণব কুমার গোস্বামী এ বস্তা বদল করার সঙ্গে জড়িত । ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১-২২ আমন মৌসুমে ঠাকুরগাঁও সদর চালকলমানিকদের কাছ থেকে ৮ হাজার ৬৫২ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয় । খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাহাদুরপাড়া এলাকার হবিবর রহমান খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চাল পান । বস্তা খুলে গুটি চালের বদলে তিনি হাইব্রিড ধানের চাল দেখতে পান ।
পড়ে তিনি বিষয়টি খাদ্যগুদামের শ্রমিকদের জানান,
এটা নিয়ে কানাঘুষার একপর্যায়ে বিষয়টি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমানের কানে চলে যায় ।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক তখন খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলামকে ডেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন,
মনিরুল ইসলাম ঘটনাটি যাচাই করতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র বর্মনকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেন ।
২০ অক্টোবর তদন্ত শুরু করে কমিটি, তদন্ত শেষ হয় ২৩ অক্টোবর প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
তদন্তে কমিটির প্রধান নিখিল চন্দ্র বর্মন জানান,
তদন্ত কমিটিকে কেবল চাল বদল করা হয়েছে কি না,
তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল।
তারা এর সততা পেয়েছেন। তবে কি পরিমাণ চাল বদল করা হয়েছে। তা তাঁরা জানতে পারেনি।
গুদামের এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
গুদামের একটা খামালে ৪ হাজার ৪০০ বস্তা থাকে ।
খামালের চারিদিকে আমন চালের বস্তা রেখে ভিতরে হাইব্রিড চালের বস্তা সাজিয়ে রাখা হয়। এ কারণে বাইরে থেকে তা বোঝার উপায় থাকে না ।
তাদের কাছে তথ্য আছে, ২ হাজার ৮০০ বস্তা (৩০ কেজির বস্তা) চাল বদল করা হয়েছিল। সেটা হিসাব করলে দাঁড়ায় ৮৪ মেট্রিক টন চাল। এর মধ্যে কিছু বস্তার বিতরণ করা হয়েছে। এখনো গুদামে প্রায় ১ হাজার ৫০০ বস্তা হাইব্রিড ধানের চাল আছে ।
গত ২০২১-২২ মৌসুমে আমন চাল কেনার সময় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খাদ্য গুদামে ওসি,এল-এসডির দায়িত্বে ছিলেন বিশ্বজিৎ সাহা ।
পরে তিনি বদলি হয়ে যান। সে পদে ৩ মার্চ যোগ দেন প্রণব কুমার গোস্বামী, চাল বদল করার অভিযোগ সম্পর্কে প্রণব কুমার গোস্বামী বলেন, তিনি এখানে যোগ দেওয়ার পর গুদামে অনিয়ম বন্ধ হয়ে গেছে বলে, সবাই তাকে সরাতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে এর এক সদস্যও এই চাল কেনার সঙ্গে সনাক্ত ছিলেন। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জড়িত । তিনি যেভাবে চাইছেন সেভাবেই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম বলেন,
খাদ্যগুদামে চাল বদলের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল । তদন্তে এই ঘটনার সততা পাওয়া গেছে,
তবে কি পরিমান চাল বদল করা হয়েছে, তা নির্ধারণ করা হয়নি। বিষয়টি উদ্বোধন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর যে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়, এই অনিয়মের যার সনাক্ততা পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে । ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, গুদামের চাল নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা সন্দেহ ছিল।
সেটা দূর হয়নি তবে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি গুদামে যে ধরনের চাল থাকার কথা সেখানে তা ছিল না।