বহুল আলোচিত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ মঙ্গলবার ৮ নভেম্বর। গত ২০ অক্টোবর মামলাটির পুনঃযুক্তিতর্ক শুনানি শেষে এই তারিখ নির্ধারণ করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক বেগম সাদিয়া সুলতানা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, এর আগে আদালতের বিচারক পরিবর্তন হওয়ার কারণে ৪অক্টোবর রায় ঘোষণা দিন পিছিয়ে যায়। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতে বদলি হয়। আর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে নতুন বিচারক হিসেবে বেগম সাদিয়া সুলতানা যোগদান করেন। তাই মামলার রায় পেছানো হয়। নতুন বিচারক যোগদান করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ওই মামলাটির যে যুক্তিতর্ক হয়েছিল সেটি ২০অক্টোবর পুনঃপর্যালোচনার দিন ধার্য করেন। ওইদিন মামলাটির যুক্তিতর্কের পুনঃপর্যালোচনার পর ৮ নভেম্বর রায়ের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়।
তিনি আর জানান, দিনাজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রথম থেকে মামলাটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু মামলাটি শেষের দিকে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে স্থানান্তর হয়। সেখানেই গত ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। মামলাটিতে মোট ৫৩জন সাক্ষী দিয়েছেন। মামলায় একমাত্র আসামি ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের বরখান্ত মালি রবিউল ইসলাম উচ্চতর আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। তবে তার উপস্থিতিতেই আদালতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
উল্লেখ্য,২০২০সালের ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে সরকারি ডাকবাংলাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুপুর ১টায় হেলিকপ্টার যোগে ওয়াহিদা খানমকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ ও র্যাব কয়েকজনকে আটক করেন। ১১সেপ্টেম্বর রাতে জেলার বিরলের বিজোড়া ইউপির বিজোড়া গ্রামের খতিব উদ্দীনের ছেলে ও ঘোড়াঘাটের ইউএনও বাসভবনের সাবেক কর্মচারী রবিউল ইসলামকে আটক করা হয়। ২০সেপ্টেম্বর তাকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৭এর বিচারক ইসমাইল হোসেনের এজলাসে উপস্থিত করা হলে তিনি ১৬৪ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২১ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি ইমাম জাফর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রবিউলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।