গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর নির্দেশনা অনুসারে রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ে ২০২৫ সালের মধ্যে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতসহ ৭ দফা দাবিতে দিনাজপুরে নারী উন্নয়ন ফোরাম ও অপরাজিতা নেটওয়ার্ক ‘র সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত।
১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনাযতনে নারী উন্নয়ন ফোরাম ও অপরাজিতা নেটওযার্ক ‘র উদ্দ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অপরাজিতা নেটওয়ার্ক ‘র সদস্য মোছাঃ আরজিনা বেগম। লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্র থেকে মফস্বল পর্যন্ত সকল কাঠামোয় নারীর অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব পর্যায়ে অবস্থান তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের সবচেয়ে বড সুচক গুলোর একটি। গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ অনুচ্ছেদ ৯০ (খ)তে বলা ছিল যে, রাজনৈতিক দলগুলির কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সকল কমিটিতে শতকরা ৩৩ ভাগ নারী প্রতিনিধিত্ব ২০২০ সালের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে, কিন্তু আমরা ২০২২ সাল অতিক্রম করলেও এখনো কোনো দলই তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করেনি। আমরা দেখেছি দিনাজপুর জেলা কমিটির বিভিন্ন দলের সাংগঠনিক কমিটিতেও এখনো নারীদের ৩৩% বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আশা করছি সংগঠনের ৭ দফা দাবীর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করলে আমরা নারীরা উপকৃত হবো। সেই সাথে দেশের সকল দলের মধ্যেও এই দাবি পুরণে এগিয়ে আসবেন।
এ সময় কাহারোল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমী আক্তার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন । এসময় উপস্থিত ছিলেন অপরাজিতা প্রকল্পের বিরামপুর সদস্য জেসমিন আকতার রিভা,ইসমত আরা, অপরাজিতা চিরিরবন্দর উপজেলার সদস্য কোহিনুর বেগম, কাহারোল উপজেলার সদস্য সুরাইয়া বেগম,কনিকা রানী,সদর উপজেলার সদস্য লতা রানী রায়, রহিমা পারভীন, ডেমক্রেসি ওয়াচ জেলা সমন্বয়ক মোঃ কামরুজ্জামান ও সদর উপজেলা সমন্বয়ক মুশফিকুর রহিম। সাংবাদিক ও অপরাজিতা প্রকল্পের সকল সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন সমাপ্ত করেন সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন আরা জোসনা।
উল্লেখ্য, নারী উন্নয়ন ফোরাম ও অপরাজিতা নেটওযার্ক ‘র দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে এক. রাজনৈতিক দলগুলো সমুহে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার ব্যাপারে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল (২০২০),তা যেহেতু ইতিমধ্যে অতিক্রম হয়েছে, নতুন একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তা অনতিবিলম্বে প্রকাশ করা হোক এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হোক, আমরা চাই এই সীমা সীমা হোক ২০২৫ সাল। দুই . আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সকল রাজনৈতিক দলের সকল কমিটিতে এক তৃতীযাংশ (৩৩ ভাগ) প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে, এই শর্ত রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন ২০২০ এ যুক্ত করতে হবে। তিন. গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সুনির্দিষ্ট ওরা প্রয়োজন যে, রাজনৈতিক দলের সম্পাদক মন্ডলী বিশেষ করে সভাপতি/সম্পাদক,যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ গুলোর মধ্যে যে কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। চার.জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন রাজনৈতিক দলের মুল কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ ও অগ্রগতি হলো তা নির্বাচন অফিস/কর্মকর্তারা নিয়মিত ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। পাঁচ. জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারীদের ৩৩ শতাংশ দেয়ার শর্ত যুক্ত করা। ছয. রাজনৈতিক দলের কমিটি গুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে সম্মেলনের আয়োজন করা। উপজেলা এবং জেলার মূল কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা। কার্যনির্বাহী কমিটিতেও ৩৩% নারীকে সম্পৃক্ত করা। সাত. দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলকে সাহসী ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে কেবলমাত্র প্রতিকি অংশগ্রহণ নয়, নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং মনোনয়ন বৃদ্ধি করতে হবে।
মঙ্গলবার , ১৫ নভেম্বর ২০২২ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
